thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিতে সেনাবাহিনী বা র‌্যাবকে চান রওশন

২০১৭ জুন ২৮ ১৯:২১:১৭
ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিতে সেনাবাহিনী বা র‌্যাবকে চান রওশন

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী কিংবা র‌্যাবকে ব্যবহার করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ। তিনি বলেছেন, ‘যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় সেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যায়। জনগণকে উদ্ধার করে, পুনর্বাসন করে। ভেজাল খাওয়া এটা আমাদের জাতীয় সমস্যা। সেখানে সেনাবাহিনী বা র‌্যাবকে আপনি ব্যবহার করছেন না কেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি সেনাবাহিনী ব্যবহার করেন, না হয় র‌্যাবকে ব্যবহার করেন। আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আপনি যদি দেশকে ভেজালমুক্ত করতে না পারেন তাহলে কেউ পারবে না। ভেজালমুক্ত খাবারের ব্যবস্থা করলে আপনি জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’

জাতীয় সংসদে বুধবার (২৮ জুন) বাজেট বক্তৃতায় অংশ নিয়ে রওশন এরশাদ এ অনুরোধ জানিয়েছেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে রওশন এরশাদ বলেছেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যখাতে কোনো টাকা লাগবে না। কোনো ডাক্তার আমাদের দরকার নেই। কোনো হাসপাতাল দরকার নেই, কোনো ওষুধের দরকার নেই। কারণ, ভেজাল খেয়ে খেয়ে আমরা তো মরেই যাচ্ছি। টাকায় কি দরকার, হাসপাতালের কি দরকার আর ডাক্তারের কি দরকার। কোনো কিছুর দরকার নেই আমাদের। ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে ধরে ১০, ১২, ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। এটা তো যথেষ্ট না। একজনকে ছুরি দিয়ে মারা আর গুলি করে মারা তো একই কথা। এরা তো পুরো জাতিকে মেরে ফেলছে। এগুলো আপনাদের বন্ধ করতে হবে। তা না হলে তো স্বাস্থ্যখাতে কোনো বরাদ্দ লাগবে না। স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ মাননীয় অর্থমন্ত্রী অন্যখাতে দিয়ে দেন। কারণ, আমরা তো ভেজাল খেয়ে তো মরেই যাচ্ছি। হা- আমরা তো একবারে মরবো না। ধুকে ধুকে মরছি। নতুন প্রজন্মকে কি খাওয়াচ্ছেন। তারা কিভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। এমন কোনো দো্কান নেই, এমন কোনো রেস্টুরেন্ট নেই যেখানে ভেজাল খাবার নেই। টেলিভিশনে দেখাচ্ছে। ভেজাল বাসি-পচা খাবার বিক্রি হচ্ছে না। কাজেই আপনার কাজ অনেক কমে গেছে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আপনার আর বরাদ্দ লাগবে না।’

বাজেট আলোচনায় তিনি সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে বাজেট পাস করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। রওশন এরশাদ বলেছেন, ‘গত অর্থবছরের বাজেটে উনার (অর্থমন্ত্রী) চিন্তা ছিল রাজস্ব আদায়। এবার তিনি ভাবছেন ১৫শতাংশ ভ্যাট ধরা হয়েছে, সম্পূরক শুল্ক আছে, করপোরেটের ট্যাক্স আছে। কাজেই এবার রাজস্ব আদায় হবে। এভাবে মানুষের উপর চাপিয়ে দিয়ে ভ্যাট আদায় করা কিন্তু সমীচীন হবে না। এটা নিয়ে চিন্ত ভাবনা করতে হবে।’

এডিবির বিষযে বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, ‘অর্থমন্ত্রী ভাল করেই জানেন এডিবির অর্থায়নে যেসব প্রকল্প নেওয়া হয় তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয় না। প্রথম ১০ মাসে ৫৮ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়। পরের ২ মাসে তাড়াহুড়ো করে বরাদ্দটা নেয়, কিন্তু প্রকল্প শেষ হয় না। বড় প্রকল্প মানেই বড় লুটাপাট। এডিবিতে যা বরাদ্দ দেওয়া হয় তা যেন বাস্তবায়ন হয়।’

মেডিটেশনে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেছেন, ‘এটি করলে মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে উপকৃত হয়। ভারতেও এটির উপরে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাংলাদেশেও গতবছর এটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আবার কেন এটি আনা হলো?’ মেডিটেশন সেবাকে স্থায়ীভাবে সেবাখাতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান তিনি।

কর্মসংস্থানের জন্য বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের উপর গুরাত্বারোপ করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, ‘বিনিয়োগের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন, যা এখনো আমাদের দেশে গড়ে ওঠেনি। বেসরকারি বিনিয়োগ আনতে সে পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। এখনো গ্রামে-গঞ্জে বিদ্যুত নেই। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান হবে না। সেজন্য ইনফ্রাস্টাকটার গড়ে তুলতে হবে। নইলে বিনিয়োগ করতে দ্বিধাগ্রস্ত হবে।
প্রতিবছর ২৪-২৫ লাখ ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শেষ করে বের হয়। কর্মক্ষম ১০ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৫ কোটির কাজ আছে। বাকি লোকের কর্মসংস্থান নেই। সবার তো চাকরি হবে না। এলাকাভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কর্মসংস্থান না হলে ছেলেমেয়েরা নেশাগ্রস্ত হবে, না হয় জঙ্গি হবে।’

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/জেডটি/এনআই/জুন ২৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর