thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

লালমনিরহাটে বন্যায় গো খাদ্যের সংকট, দুশ্চিন্তায় খামারীরা

২০১৭ আগস্ট ১৯ ২২:০৯:৫৮
লালমনিরহাটে বন্যায় গো খাদ্যের সংকট, দুশ্চিন্তায় খামারীরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি : বন্যার কারণে লালমনিরহাট জেলায় গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে সাধরণ গরু চাষীদের চেয়ে চরম দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে খামারীদের। একদিকে গো খাদ্যের সংকট অন্যদিকে ভারতীয় গরু প্রবেশের প্রভাবে দুশ্চিন্তায় পড়েছে খামারীরা। তবে কোথাও কোথাও খড় পাওয়া গেলেও তা এক ভ্যান ক্রয় করতে হচ্ছে ১১শ থেকে ১৫শ টাকা করে। এছাড়া বন্যার কারণে জেলার ৫টি উপজেলায় নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২০ হাজার পশু।

লালমনিরহাট জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত কোরবানির ঈদে জেলায় চাহিদা ছিল সাড়ে ৫৬ হাজার পশু। এ বছর তা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬২ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ষাড়, বলদ, গাভী, ছাগল, ভেড়া ও কিছু মহিষ। তবে বন্যার কারণে জেলার ৫টি উপজেলায় নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২০ হাজার পশু। এসব পশুকে প্রতিশেধক টিকাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর বন্যার কারণে প্রায় ২০১.৬০ একর চারণ ভূমি নষ্ট হওয়ায় গো খাদ্যের সংকটও বেড়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা এলাকার গরু ব্যবসায়ী দবিয়ার রহমান জানান, চরের মানুষজনকে প্রতি বছরই গরু লালন-পালন করতে দেই আমি। এ বছরই ১৭টি গরু দিয়েছি তিস্তার চরের বিভিন্ন নিম্ন আয়ের পরিবারকে। তবে বন্যার কারণে চরাঞ্চলে গো খাদ্য সংকটের পাশাপাশি গরুগুলোর মাঝে নানা রোগ ব্যধি দেখা দিয়েছে। ফলে লালন-পালন করা পরিবারগুলো ওই সব গরু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে ওই সব গরু বিক্রি করার কথা থাকলে শেষ পর্যন্ত ভাগ্যে কি যে হয়।

একই এলাকার হামিদুল হক জানান, বন্যার কারণে গরুর চারণ ভূমি নষ্ট হওয়ায় ঘাস ও খড়ের সংকট দেখা গেছে। আর পানি নামতে না নামতে গরুগুলোর মাঝে নানা রোগ দেখা দেওয়ায় কষ্টে আছেন।

এ দিকে আদিতমারী উপজেলার বড়াবাড়ি গ্রামের খামারী কাজল মিয়া জানান, দেশীয় প্রযুক্তি অনুসরণ করে ৪টি গরু মোটা তাজা করছি। গো খাদ্যের সংকট আর ঔষধপত্রের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তার উপর যে হারে ভারতীয় গরু জেলার হাট বাজারগুলোতে ঢুকছে তাতে করে লাভ তো দূরের কথা আসল দাম পাওয়াই যায় কি না।

একই এলাকার আরেক খামারী অনিক জানান, ৮টি গরু নিয়ে গড়ে তোলা আমার খামার। প্রতিটি গরুতে খরচ দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার টাকার মতো। কিন্তু বর্তমানে বাজারে গরুর যে মূল্য তাতে করে গরু প্রতি তার ৪/৫ হাজার করে লোকসান গোণা ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না। ভারতীয় গরুর অবাধ প্রবেশ যদি বন্ধ না হয় তাহলে যে স্বপ্ন নিয়ে বড় খামার গড়তে চেয়েছি, সে স্বপ্নে মনে হয় মরিচা পড়ে যাবে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ এস এম নাসির উদ্দিন খান জানান, আক্রান্ত গবাদিপশুকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। গো খাদ্য সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানা হয়েছে। ঢাকা থেকে চার টন গো খাদ্য আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় গরুর আগ্রাসন ঠেকানো না গেলে খামারীদের লোকসান গুণতে হবে পাশাপাশি খামারীরা খামার করা থেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/আগস্ট ১৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর