thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

ভারতে চালু হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধ

২০১৭ সেপ্টেম্বর ১৭ ২২:০১:১৫
ভারতে চালু হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ভারতের গুজরাট রাজ্যের নর্মদা জেলায় রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) চালু করা হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধ।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘সর্দার সরোবর ড্যাম’ নামের এই বাঁধটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।

বাঁধটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল ৫৬ বছর আগে। আদালতের মামলা এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের প্রতিবাদের মুখে এতদিন এটি চালু করায় বিলম্ব হয়েছে।

রবিবার ছিল নরেন্দ্র মোদির ৬৭তম জন্মদিন। নিজের জন্মদিনে এ প্রকল্পটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

নর্মদা নদীর ওপর ওই বাঁধের উচ্চতা বাড়িয়ে ১৩৮ মিটার করার ফলে ওই জলাধারের ধারণ ক্ষমতা ১২.৭ লাখ কিউবিক মিটার থেকে বেড়ে হবে ৪৭.৩ লাখ কিউবিক মিটার।

১৯৬১ সালে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু এই বাঁধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তখন থেকেই এটি ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। বিতর্কের কারণেই ১৯৮৭ সালের আগে এর নির্মাণ কাজ শুরু করা যায়নি।

রবিবার প্রকল্পের চূড়ান্ত পর্যায়টির উদ্বোধন করার পর প্রধানমন্ত্রী মোদি দাবি করেছেন, এই বাঁধের বিরুদ্ধে বিপুল অপপ্রচার ও মিথ্যা প্রচারণা চালানো চেয়েছে। কিন্তু আসলে এটি হল প্রযুক্তিগত একটি বিস্ময়!

বিশ্ব ব্যাঙ্ক এই প্রকল্পে অর্থায়ন করতে রাজি হয়নি, কিন্তু তারপরও ভারত নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্যে এই বাঁধ নির্মাণ করেছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

নরেন্দ্র মোদির ভাষায়, ‘মা নর্মদার জল দেশের লাখ লাখ নাগরিকের জীবনকে চিরদিনের জন্য পাল্টে দেবে।’

বাঁধটি উদ্বোধনের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেও নর্মদা নদীর জলসীমা বৃদ্ধি পেয়ে মধ্যপ্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা ও বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের নেত্রী মেধা পাটেকর পরিবেশগত ঝুঁকি আর মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হওয়ার যুক্তিতে আগাগোড়াই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছেন। তিনি এদিন মধ্যপ্রদেশের বারওয়ানি জেলাতে এই বাঁধের বিরুদ্ধে ‘জল সত্যাগ্রহ’ আন্দোলন করেছেন।

ভারত সরকার দাবি করছে, এই জল একটি ক্যানাল নেটওয়র্কের মধ্যে দিয়ে গুজরাটের প্রায় নয় হাজার গ্রামে পৌঁছে দেয়া হবে, আর তাতে ১৮ লাখ হেক্টরেরও বেশি কৃষিজমি সেচের পানি পাবে।

সর্দার সরোবর ড্যামে উৎপাদিত বিদ্যুৎ মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রও গুজরাট, এই তিন রাজ্য নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবে।

ভারতের পরিবেশ আন্দোলনের যে কর্মীরা বহু বছর ধরে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তারা এ কথার সঙ্গে একমত নন। বরং এই সর্দার সরোবর ড্যাম লাখ লাখ গ্রামবাসীকে আশ্রয়হীন করেছে বলে দাবি করছেন তারা।

‘নর্মদা বাঁচাও’ আন্দোলনে'র নেতৃবৃন্দ বলছেন, এই প্রকল্পের ফলে বাস্তুচ্যুত মধ্যপ্রদেশের ১৯০টি গ্রামের চল্লিশ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসনের আওতাতেই আনা হয়নি। যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো গড়া হয়েছে সেগুলোও বসবাসের অযোগ্য।

শুক্রবার যখন ড্যামের উচ্চতা বাড়িয়ে ১২৮.৩ মিটার করা হয়, তখনই মধ্যপ্রদেশের নিসারপুর শহর ও আশেপাশের বহু গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়ে।

রবিবারের মধ্যে ওই রাজ্যের বারওয়ানি জেলার রাজঘাটে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুও পানির নীচে তলিয়ে যায়। ওই সেতুটি পার্শ্ববর্তী ধার জেলার সঙ্গে রাজঘাটের সংযোগ রক্ষা করত।

সর্দার সরোবর ড্যাম এভাবে বহু গ্রাম-শহর-জনপদকেই চিরতরে দেশের মানচিত্র থেকে মুছে দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের কর্মীরা।

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর