জয়সুরিয়ার রেকর্ড ভাঙলেন তামিম

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শ্রীলঙ্কার সাবেক তারকা সনাথ জয়সুরিয়া একটি রেকর্ড হারালেন মঙ্গলবার। সেটি তিনি হারালেন বাংলাদেশের তারকা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের কাছে। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এদিন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪২ রান করে একই ভেন্যুতে সর্বাধিক রান করার রেকর্ড গড়েছেন তামিম।

তামিমের কৃতিত্ব অবশ্য এখানেই শেষ হচ্ছে না। এদিন তিনি বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে স্পর্শ করেছেন ৬ হাজার রানের মাইলফলক।

মঙ্গলবার ২ হাজার ৪৭৩ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন তামিম। বাংলাদেশের সেরা ওপেনারের সামনে তখন সনাথ জয়াসুরিয়ার রকের্ড ভাঙার হাতছানির । জয়াসুরিয়ার সংগ্রহ ছিল ৭১টি ওয়ানডেতে ২ হাজার ৫১৪ রান।

এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়তে তামিমকে খেলতে হয়েছে ৭৪ ম্যাচের ৭৩টি ইনিংস।

২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিম ইকবালের। তবে মিরপুরের ২২ গজে খেলতে তামিমকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩টি ম্যাচ। একই বছরের মে মাসে ভারতের বিপক্ষে মিরপুরে প্রথমবারের মতো ব্যাট হাতে নামেন। আর প্রথম ম্যাচেই ৪৫ রানের ইনিংস খেলে মিরপুরের ২২ গজকে জানিয়ে দিয়েছিলেন- তিনি রাজত্ব করতেই এসেছেন।

সেই থেকে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম তার রান উৎসবই দেখেছে। তামিম তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিও পেয়েছেন মিরপুরের এই ২২ গজে। ২০০৮ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

তামিম ৯টি সেঞ্চুরির পাঁচটি পেয়েছেন মিরপুরে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ছাড়াও ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে চারটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন। যেখানে ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ১২৫ রানের ইনিংস। এরপর ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে পর পর দু্টি সেঞ্চুরি এই মাঠেই পেয়েছেন। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৩২ রান করার পর দ্বিতীয় ম্যাচেও খেলেন অপরাজিত ১১৬ রানের ইনিংস।

সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচটিতেও সেঞ্চুরি পান তামিম। খেলেন ১২৮ রানের ইনিংস।

সাফল্যের পাশাপাশি তিক্ত অভিজ্ঞতাও আছে তামিমের। ক্যারিয়ারে মোট ১৬বার রানের খাতা না খুলেই আউট হয়েছেন। যার মধ্যে আট বার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে।

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ২ হাজার ৫১৪ রান নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ওপেনার সনাথ জয়াসুরিয়া। ৭১ ম্যাচে ৩৮.৬৭ গড়ে ৪ সেঞ্চুরি ও ১৯ হাফসেঞ্চুরিতে জয়াসুরিয়া প্রেমাদাসায় এই মাইলফক স্পর্শ করেন। এই মাঠে তার সর্বোচ্চ রান ১৩০। ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে ১৩০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছিলেন ‘মাতারা হারিকেন’।

এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল হক। শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের ব্যাটিং কিংবদন্তির রান ২ হাজার ৪৬৪। শারজাতে ৫৯ ম্যাচে ইনজামাম-উল-হক ১৭ টি হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি চারটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন। শারজাতে ১৯৯৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৯ বলে অপরাজিত ১৩৭ রানের ইনিংসটি তার সেরা ইনিংস।

একই ম্যাচে আরও একটি মাইলফলকে পৌঁছেছেন তামিম ইকবাল। ৬ হাজার ক্লাবে প্রবেশ করতে তামিমের প্রয়োজন ছিল ৬৬ রানের। ৩৫তম ওভারে ক্রেমারের প্রথম বল লংঅনে ঠেলে দিয়ে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এই ক্লাবের সদস্য হন তামিম। বিশ্বক্রিকেটে এই ক্লাবে আছেন আরও ৫৪জন ক্রিকেটার। তামিম ৫৫তম ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন।

এত কীর্তির পরও মঙ্গলবার আফসোস নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তামিমকে। আর ২৪ রান করতে পারলে যে এদিন ক্যারিয়ারের আরেকটি সেঞ্চুরির দেখা পেতে পারতেন তিনি!

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/জানুয়ারি ২৩, ২০১৮)