thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল 24, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৮ শাওয়াল 1445

কর আদায় বাড়াতে এনবিআরের সংস্কার জরুরি

২০১৮ জানুয়ারি ২৭ ১৯:২১:৪২
কর আদায় বাড়াতে এনবিআরের সংস্কার জরুরি

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) অনুপাতে বিশ্বের যে সব দেশে কম কর আদায় হয়, তার মতে বাংলাদেশ অন্যতম। বর্তমানে জিডিপির অনুপাতে কর আদায় মাত্র ১০ দশমিক ২ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেও এই হার সবচেয়ে কম। কিন্তু করের হার সবচেয়ে বেশি। আবার মোট করের মধ্যে ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর মাত্র ৩ শতাংশ। এই অবস্থার উন্নয়নে বিদ্যমান কর আইন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ব্যাপক সংস্কার জরুরি।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কোর্স মাস্টারস অব অ্যাকাউন্টেন্সি ইন ট্যাক্সেশন প্রোগ্রামের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে কোর্সের পরিচালক ঢাবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর, আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট জামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ঢাবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল হাকিম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোরাশাররফ হোসেন বলেন, শিগগিরই নতুন আয়কর ও শুল্ক আইন আসছে। যা করদাতাদের সহায়ক হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের বিদ্যমান আয়কর এবং শুল্ক আইন নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা রয়েছে। বলা হচ্ছে এই আইন যুগোপযোগী নয়। কিন্তু নতুন ম্যাসেস হল কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন আয়কর ও শুল্ক আইন আসছে। এই আইন অত্যান্ত সহজ এবং ব্যবসাবান্ধব হবে। আইনে ব্যবসায়ীদের হয়রানি নয় বরং সহায়তা করা হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আভ্যন্তরীণ সম্পদ আদায়ে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে যাচ্ছে দেশ। এক্ষেত্রে বর্তমান সরকার বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে কর আদায় কাঙ্খিত হারে বাড়বে।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশে করের হার অনেক বেশি, কিন্তু কর আদায় কম। আর আমাদের কর ব্যবস্থা শুল্কের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু উন্নত দেশগুলো তা ব্যতিক্রম। তিনি বলেন. মোট রাজস্ব আয়ের মাত্র ৩ শতাংশ ব্যক্তি শ্রেনীর আয়কর থেকে আসে। কিন্তু যুক্তরাজ্যে এই প্রায় ৮৬ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়াতে ৬২ শতাংশ, পাশের দেশ ভারতে ১১ দশমিক ১০ শতাংশ এবং মালয়েশিয়ায় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাবে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, জিডিপির অনুপাতে কর আদায়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দুর্বল অবস্থানে বাংলাদেশ। জিডিপির বিপরীতে বর্তমানে বাংলাদেশে কর আদায় ১০ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু ভারতে এই হার ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ, নেপালে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং শ্রীলংকায় ১২ দশমিক ৪ শতাংশ কর আদায় হচ্ছে। আর এই অবস্থার উত্তরণে এনবিআরের ব্যাপক সংস্কার দরকার।

এ সময়ে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের নৈতিক মানদণ্ডের উপর জোর দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের রাজস্বখাতের উন্নয়নে প্রথমবারের মতো মাস্টার অব অ্যাকাউন্টেন্সি ইন ট্যাক্সেশন’ কোর্স করল ঢাবি। প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এআইএস) বিভাগের আওতায় এই কোর্স চালু হল। দুই বছর মেয়াদি এ কোর্সে রাজস্ব নিয়ে কাজ করে এ সংক্রান্ত সরকারি কর্মকর্তা, কর আইনজীবী, বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। কোর্সে অংশগ্রহনকারীদের আরও উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফারের জন্য কাজ করছে ঢাবি।

ড. মিজানুর রহমান বলেন, দেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়েছে। তবে সেভাবে দক্ষ জনবল বাড়েনি। বিদেশ থেকে লোকজন এসে এদেশে উচ্চ বেতনে চাকরি করছে। এতে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে দক্ষতার অভাবে বিশাল জনগোষ্ঠী বেকার থাকছে। এই ঘাটতি পূরণে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে পেশাদারদের সুবিধার্থে দেশে প্রথম এ ধরনের প্রোগ্রাম চালু করল ঢাবি।

তিনি আরও বলেন, এই কোর্স করলে একজন শিক্ষার্থীর অডিট, আয়কর, ভ্যাট, কাস্টমস, ব্যাংকিং, শেয়ারবাজার এবং কর আইনের মতো টেকনিক্যাল বিষয়ে দক্ষতা বাড়বে। এতে সহজে তারা পেশাগত কাজে উন্নতি করতে পারবে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জানুয়ারি ২৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর