thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

১০০ আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি

২০১৮ অক্টোবর ১৯ ০১:২০:৫৪
১০০ আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জোট সম্প্রসারণেরও উদ্যোগ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। ফলে বদলে যাচ্ছে জোটকেন্দ্রিক নির্বাচনী হিসাব-নিকাশ। বর্তমান ২০ দলীয় জোট বহাল রেখেই 'জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট' নামে নতুন আরেকটি জোটে শামিল হয়েছে বিএনপি। এখন সরকার ও বিরোধী জোটের বাইরে থাকা ছোট ছোট ধর্মভিত্তিক এবং বাম ও ডানপন্থি অন্য দলগুলোকেও ঐক্যফ্রন্টে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগবিরোধী নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্য থেকেও প্রার্থী মনোনয়ন দেবে দলটি। নির্বাচনে আসন ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে আগের অবস্থান থেকেও সরে আসছে বিএনপি। এত দিন জোটের শরিকদের মধ্যে ৫০ থেকে ৬০টি আসন বণ্টনের পরিকল্পনা থাকলেও এখন আরও উদার হয়ে উঠেছে বিএনপি হাইকমান্ড। সম্প্রসারিত জোট এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি মিলিয়ে সর্বোচ্চ একশ' আসন পর্যন্ত ছাড়তে রাজি বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এরই মধ্যে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের কাছে আসন বণ্টনের ব্যাপারে যোগ্য নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে বলে বার্তা পাঠিয়েছেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে দলের সঙ্গে থাকা নেতাদের ত্যাগ স্বীকারের বিষয়টি বিএনপি ভুলে যাবে না বলে জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে নতুন জোট করা দলগুলোর নেতাদের প্রতিও যথাযথ সম্মান দেখানো হবে। তবে কৌশলগত কারণে আসন বণ্টনের ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি নন বিএনপির কোনো নেতা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, দেশ ও গণতন্ত্রের বৃহত্তর স্বার্থে বড় ছাড় দিতে তারা প্রস্তুত।

এ মুহূর্তে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করাই বড় চ্যালেঞ্জ। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায়ে আরও যেসব দল তাদের জাতীয় ঐক্য গড়ার ডাকে সাড়া দেবে, সবাইকে নিয়ে আন্দোলন ও নির্বাচন করতে চান। জোট সম্প্রসারণ ও আসন বণ্টন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনও আলোচনার সময় আসেনি। এখন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সাত দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্য নিয়ে ঘোষিত কর্মসূচি পালনকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তারা। আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করে নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপি দুই জোটের শরিক সব দলকেই যথাযথ মূল্যায়ন করবে বলে জানান মির্জা ফখরুল।

২০০৮ সালে ২৬০ আসনে প্রার্থী ছিল বিএনপির। ৪০ আসন ছেড়ে দেওয়া হয় শরিকদের। জামায়াতকে ছাড় দেওয়া ৩৩ আসনে 'ধানের শীষ' প্রতীক ছিল না। বিজেপি, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে দুটি করে এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টিকে (জাগপা) একটিসহ মোট সাতটি আসন ছেড়েছিল বিএনপি। তবে এসব দলের প্রার্থীরা 'ধানের শীষ' প্রতীকে ভোটে অংশ নেন। ২০১২ সালে জোট সম্প্রসারণে বিএনপির শরিক বেড়েছে। ১৪টি দল গত কয়েক বছরে বিএনপির জোটে এসেছে। সর্বশেষ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম, আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডি এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ে 'জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট' নামে নতুন জোট করেছে বিএনপি। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নতুন ও পুরনো মিত্রদের ধরে রাখা এবং জোট আরও সম্প্রসারণ করতে বিএনপি হাইকমান্ড এবার সর্বোচ্চ একশ' আসন পর্যন্ত ছাড়ার চিন্তাভাবনা করছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, এবার জোটবদ্ধ নির্বাচনের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। নিজেদের দীর্ঘদিনের আসনও ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে তারা। বিএনপি থেকে ন্যাপ ও এনডিপি বেরিয়ে যাওয়ার পর জোটের অন্য শরিকদের যথাযথ মূল্যায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

জোট সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেছেন, অনেক দল ক্ষমতাসীন জোটে যোগ দিতে চায়। তবে জোট সম্প্রসারণ হবে কি-না, এ সিদ্ধান্ত পরে হবে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশের জনগণের চাওয়া-পাওয়ার জন্যই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সামনে এই ঐক্য আরও জোরদার হবে; আরও সম্প্রসারিত হবে। সরকার ভীত হয়ে ফ্রন্টের নেতাদের সম্পর্কে নানা রকম অপপ্রচার চালাচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/অক্টোবর ১৯,২০১৮)


পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর