thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল 24, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৮ শাওয়াল 1445

হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকুন, সেনাবাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী 

২০১৯ মার্চ ০৩ ২০:০০:২২
হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকুন, সেনাবাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী 

রাজশাহী প্রতিনিধি: পবিত্র সংবিধান ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক যে কোনো হুমকি মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার দুপুরে রাজশাহী সেনানিবাসে ইনফেন্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারে বীর রেজিমেন্টের চার ব্যাটালিয়নকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক ও চৌকস সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীর দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা সেনাবাহিনীতে তিনটি নতুন ডিভিশন প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীতে প্যারাকমান্ডো বিভাগ গঠন করা হয়েছে। দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা সুসংহত করতে সংযোজিত হয়েছে এমএলআরএস ও মিসাইল রেজিমেন্ট। অভিযানিক সক্ষমতা বাড়াতে অত্যাধুনিক বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, হেলিকপ্টার, আর্টিলারিগান প্রভৃতি সংযোজন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর উন্নয়নে তার সরকারের কণ্যালমুখী বিভিন্ন কাজের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পর অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও জাতির পিতা একটি শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তার জন্য ১৯৭২ সালে কুমিল্লা সেনানিবাসে গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি। তিনি ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেন। তার সুদূরপ্রসারী প্রতিরক্ষা নির্দেশনার আলোকেই সেনাবাহিনীর উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলমান। আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশ ও দেশের বাইরে সম্মানজনক অবস্থায় উন্নীত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ দেশের সম্পদ। এদেশের মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের মূর্ত প্রতীক। তাই পেশাদারিত্বের কাঙিক্ষত মান অর্জনের জন্য আপনাদের সবাইকে দক্ষ, সামাজিক, ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ ও মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হতে হবে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রাখতে ভূমিকা রেখেছেন। চতুর্থ বারের মতো সরকার গঠনের সুযোগ পাওয়ায় দেশবাসীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। নিজেকে জনগণের সেবক হিসেবে নিয়োজিত রাখার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে জনগণের প্রয়োজনে সেনাবাহিনী তাদের পাশে দাঁড়াবে- এই প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। সমুদ্রসীমা জয় করেছি। সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করে ছিটমহল সমস্যা সমাধান করেছি।

বাংলাদেশ ইনফেন্ট্রি রেজিমেন্ট সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদাতিক বাহিনীর গতিশীলতার লক্ষ্যে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাশাপাশি দ্বিতীয় রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন আমরাই প্রথম উপলব্ধি করি। স্বাধীন বাংলাদেশে দেশের নামে একটি রেজিমেন্ট থাকবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েই আমরা ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ইনফ্যান্টি রেজিমেন্ট গঠনের ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন গ্রহণ করি।

২০০১ সালের ২১ এপ্রিল আমি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ইনফেন্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারে পতাকা উত্তোলন করি। ২০১১ সালে মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় পতাকা প্রদান করি। এই রেজিমেন্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রতিষ্ঠিত একমাত্র রেজিমেন্ট। বর্তমানে এই রেজিমেন্টে দুটি প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়নসহ ৪৩টি ইউনিট রয়েছে।

এই রেজিমেন্ট সদস্যরা দেশ ও দেশের বাইরে সুনামের সঙ্গে দায়িত্বপালন করছেন। এই সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে বাহিনীর সদস্যদের একনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে সামরিক বাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে রাজশাহী সেনানিবাসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর শহীদ কর্নেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে প্যারেড পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ৭, ৮, ৯ এবং ১০ বীর’র ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা প্রদান) প্রদান করা হয়। এরপর লাঠি খেলা ও ডিসপ্লে উপভোগসহ ফটো সেশনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদসহ সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মার্চ ০৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর