thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ 24, ৫ চৈত্র ১৪৩০,  ৯ রমজান 1445

নিহত ১২ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে জাতিসংঘের সম্মান

২০১৯ মে ২৫ ০৮:২৬:৩২
নিহত ১২ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে জাতিসংঘের সম্মান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় ২০১৮ সালে ১২ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীসহ বিশ্বের ২৭টি দেশের ১১৯ জন আত্মোৎসর্গকারী শান্তিরক্ষীকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ দিয়েছে জাতিসংঘ।

‘আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার (২৪ মে) জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা জানানো হয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ বাংলাদেশসহ ২৭টি দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে এই মেডেল তুলে দেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কূটনৈতিক, সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা এবং জাতিসংঘের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন।

মরণোত্তর ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ প্রাপ্ত বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা হলেন- সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক আরজান হাওলাদার ও সৈনিক মো. রিপুল মিয়া; মালি মিশনের সৈনিক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, ওয়ারেন্ট অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক মোহাম্মদ রায়হান আলী, ল্যান্স করপোরাল মোহাম্মাদ আক্তার হোসেন ও সৈনিক মোহাম্মদ রাসেদুজ্জামান; কঙ্গো মিশনের সৈনিক মো. জানে আলম এবং সাউথ সুদান মিশনের সৈনিক মো. মতিয়ার রহমান, সৈনিক মো. মঞ্জুর আলী, ল্যান্স করপোরাল মো. মিজানুর রহমান ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. আশরাফ সিদ্দিকী।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই মেডেল গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদ।

বাংলাদেশ মিশনের সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তাসহ জাতিসংঘ সদরদপ্তরে কর্মরত বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাও অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এসব মেডেল নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।

আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের শুরুতেই মহাসচিব গুতেরেজ কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী সামরিক ও বেসামরিক শান্তিরক্ষীকর্মীর বিদেহী আত্মার স্মরণে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে অবস্থিত ‘পিসকিপার্স মেমোরিয়াল সাইটে’ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পরে অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেজ বলেন, আজ আমরা ১১৯ জন অসম সাহসী পুরুষ ও নারীকে সম্মান জানাচ্ছি, যারা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে নিরাপদ রাখার যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে জাতিসংঘ কাজ করে যাচ্ছে তা উজ্জ্বীবিত রাখার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসব বীর শান্তিরক্ষী অমলিন স্বাক্ষর রেখে গেছেন।

‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড-এর সঙ্গে আত্মদানকারী এসব শান্তিরক্ষীদের নামাঙ্কিত মরণোত্তর এ পদক দেওয়ার মাধ্যমে আমরা তাদের সারাজীবনের জন্য আমাদের হৃদয়ে ও স্মৃতিতে গভীর মমতায় প্রোথিত করে রাখলাম।’

তিনি বিশ্ব শান্তির জন্য জীবনদানকারী এসব শান্তিরক্ষীকর্মীদের সর্বোচ্চ অবদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

এর আগে উপস্থিত সুধী আত্মদানকারী শান্তিরক্ষীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

এবছর আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা, শান্তি রক্ষা’।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ বর্তমানে দ্বিতীয় বৃহত্তম শান্তিরক্ষী পাঠানো দেশ। জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৬ হাজার ৬শ শান্তিরক্ষী কাজ করছেন। এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় মারা গেছেন বাংলাদেশের ১৪৬ জন শান্তিরক্ষী।

(দ্য রিপেোর্ট/এনটি/মে ২৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর