‘সেক্যুলার’ ভারতের ‘গুজরাট মডেল’
আলতাফ পারভেজ
ভারতে আরেক দফা জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। ৩১ মে সেখানে লোকসভা নামে পরিচিত বর্তমান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের মেয়াদ শেষ হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বিশাল ও সক্রিয় উপস্থিতির কারণে দেশটির যে কোনো বড় রাজনৈতিক ঘটনাই বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও মনোযোগ আকর্ষণী। সে কারণে আসন্ন নির্বাচনে দেশটিতে কী ঘটছে, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।
ভারতে এবারের নির্বাচনে প্রধান আলোচিত চরিত্র নরেন্দ্র দমোদর দাস মোদি- ভক্তরা যাকে আদর করে ডাকে NaMo। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি)পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে তাকেই প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে এবং নির্বাচনপূর্ব জরিপগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে NaMo-ই ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন- যদিও দেশে-বিদেশে তাকে নিয়ে রয়েছে তীব্র বিতর্ক।
বর্তমানে মোদি পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। প্রদেশটিতে চতুর্থবারের মতো তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। গুজরাট শাসনের এই ‘সফলতা’ কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রিত্বে তার দাবিকে শক্তি জুগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদের মনোনয়নে বিজেপিতে এলকে আদভানীসহ সিনিয়র অন্যদের মোদি ডিঙ্গিয়ে যেতে পেরেছেন; তার পেছনে রয়েছে মুসলমানবিদ্বেষী রাজনীতিতে তার লাগাতার সাফল্য- বিশেষ করে গুজরাটে মুসলমানদের নিপীড়নের ক্ষেত্রে সফল নেতৃত্ব।
আপাতদৃষ্টিতে মোদি নিজেকে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরলেও- কার্যত তার পেছনে রয়েছে বিজেপির আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ- বিশ্বজুড়ে যারা আরএসএস নামে পরিচিত। রাজনীতিতে মোদির মূল শক্তি ও ভিত আরএসএস; এর মাধ্যমেই মোদির রাজনৈতিক জীবনের শুরু ও বিকাশ। ভারতজুড়ে ‘হিন্দুত্ব’ প্রতিষ্ঠাই আরএসএসের ঘোষিত রাজনীতি ও দর্শন। অভিযোগ রয়েছে, ২০০২ সালে গুজরাট রাজ্যে মুসলমানদের ওপর ব্যাপক গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়ে মোদি আরএসএসের কাছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্য নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেন। তবে গুজরাটের ‘অর্থনৈতিক সাফল্য’-এর মিথও রাজনৈতিক প্রচারণাযুদ্ধে তার এক বড় হাতিয়ার।
মোদির জন্ম ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর গুজরাটের ভাদনগরে। ছাত্র হিসেবে তিনি ছিলেন গড়পড়তা, তবে তার্কিক হিসেবে ছিলেন নজরকাড়া। এই যোগ্যতাকে ব্যবহার করেই তিনি আরএসএসের পূর্ণকালীন ‘প্রচারকের’ কাজ নেন। সংঘ পরিবারের হয়ে গোপনে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাপূর্ণ লিফলেট বিতরণই ছিল ‘প্রচারক’ হিসেবে তার দায়িত্ব।
ভারতের রাজনীতিতে ‘সংঘ পরিবার’-এর পূর্ণকালীন কর্মী হিসেবে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কোন দায়িত্ব পাওয়ার দুই বছর পর তাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়। মোদিও রাজনীতির তৃতীয় বছরে মহারাষ্ট্রের শীতকালীন রাজধানী নাগপুরে আরএসএসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণের পর মোদির দায়িত্ব পড়ে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন ‘অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি)’ গুজরাট শাখায় কাজ করার।
১৯৮৭ সালে আরএসএস মোদিকে সরাসরি গুজরাট বিজেপিতে ঠেলে দেয় কাজের জন্য। ১৯৯৫ সালে গুজরাট বিধানসভার নির্বাচনে মোদির প্রণীত কৌশল দলের জন্য বিশেষ কার্যকর প্রমাণিত হয়। ১৯৯৮ সালে মোদি বিজেপির ন্যাশনাল সেক্রেটারি হন। ২০০১ সালে তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিজেপির মনোনয়ন পান।
মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মোদি কর্পোরেটদের প্রেসক্রিপশন মতো প্রাইভেটাইজেশন শুরু করেন ও সরকারের আয়তন কমানোর উদ্যোগ নেন, যা ছিল আপাতদৃষ্টিতে আরএসএসের অর্থনৈতিক দর্শনের বিরোধী। আরএসএস সাধারণভাবে প্রাইভেটাইজেশন ও বিশ্বায়নে উৎসাহী নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও আরএসএস ও বিজেপি মোদির ভাবমূর্তি নির্মাণে জ্বালানি সরবরাহ করে গেছে প্রধানত ২০০২ সালের গুজরাট ‘দাঙ্গা’য় মোদির অতিদক্ষিণপন্থী ভূমিকার কারণে। উল্লেখ্য, প্রদেশটিতে হিন্দুদের সংখ্যা ৮৯ শতাংশ, মুসলমান রয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ।
আগেই বলা হয়েছে, আরএসএসের আরেক নাম ‘সংঘ পরিবার’। আরএসএস হলো এই পরিবারের ভিত্তি সংগঠন। এখান থেকেই তারা একের পর এক নানান ধরনের সংগঠনের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৬০ সাল থেকে মূলত এই প্রবণতার শুরু। সংঘ পরিবারের প্রত্যেকটি সংগঠনের ব্যবস্থাপনা স্বতন্ত্র হলেও সকলেরই আদর্শ সরাসরি ‘হিন্দুত্ব’ কায়েম; সকলেই তারা Hindutva মুভমেন্টের কর্মী। এরূপ সংগঠনের সংখ্যা অগণিত এবং কেবল রাজনীতির পরিমণ্ডলেই তা সীমাবদ্ধ নেই।
আরএসএসের প্রথম রাজনৈতিক শাখা ছিল জনসংঘ; বিজেপির পূর্বসূরি বলা যায় একে। ১৯৫১ সালের ২১ অক্টোবর এর জন্ম। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আর বলরাজ মোদক ছিলেন সম্পাদক; নির্বাচনী প্রতীক ছিল আরএসএসের প্রতীক- ‘মঙ্গল প্রদীপ’। ভাবাদর্শের ক্ষেত্রেও জনসংঘ ছিল আরএসএসের মতোই হিন্দুত্বের প্রচারক।
১৯৬৭ সালে এই দলের ধর্মীয় শাখা ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ’-এর গোড়াপত্তন হয় এবং সেক্ষেত্রেও উদ্যোগী ভূমিকায় ছিল আরএসএস। ১৯৭৭ সালে জনসংঘ লোকদলসহ ছোট ছোট আরও কয়েকটি দল নিয়ে গঠন করে জনতা পার্টি এবং কেন্দ্রে প্রথম অ-কংগ্রেসী সরকার গঠন করেছিল তারা। বাজপায়ী ও আদভানী প্রমুখ তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। ১৯৮০ সালে এই দল ভেঙ্গে যায় এবং মূল অংশ বিজেপি গঠন করে।
আরএসএসের অঙ্গসংগঠন হিসেবে ‘হিন্দুত্ব’-এর প্রচার ও প্রতিষ্ঠাই বিজেপির রাজনীতিরও মূল বিষয়। দারিদ্র্য-পীড়িত ভারতে বিপুল শোষণ-বঞ্চনা থাকলেও সেসব নিয়ে বিজেপি কথা বলে কমই। বিশ্বব্যাংক বর্তমানে দারিদ্র্যের যে মানদণ্ড অনুসরণ করে (অর্থাৎ দৈনিক ১.২৫ ডলারের নিচে যাদের আয়)- সে অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যার ৩২.৭ শতাংশই দরিদ্র। সেখানকার ৯৬.৯ শতাংশ মানুষের দৈনিক আয় ৫ ডলারের নিচে। দারিদ্র্য ও ধনী-দরিদ্রের এইরূপ বৈষম্য থেকে মানুষের দৃষ্টি আড়াল করে হিন্দুত্ব কায়েমকে রাজনীতির প্রধান এজেন্ডা হিসেবে ধরে রাখতে বিজেপি মূলত মুসলমানদের ছদ্ম প্রতিপক্ষ বানিয়ে প্রতিনিয়ত ‘বিজয় উদযাপন’ করে চলেছে। তাদের এইরূপ রাজনীতিরই আদুরে নাম হলো ‘শাইনিং ইন্ডিয়া’- যা একই সাথে ভারতীয় কর্পোরেটদের প্রধান প্রচার-পণ্যও বটে।
বিজেপি সাধারণভাবে নির্বাচন এলেই সকল সহযোগী সংগঠনকে নিয়ে পুরো দেশে, এমনকি দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ইসলামবিরোধী চূড়ান্ত এক মনোবিকার সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়। এবারও তাই হচ্ছে। পাশাপাশি গুজরাট মডেলকেও তারা বিশেষভাবে প্রচারণায় এনেছে এবার। ইসলাম বিদ্বেষের মতো সেখানেও মূলত গুচ্ছ গুচ্ছ মিথ্যাচারই বিজেপির প্রচার-পণ্য হয়ে উঠেছে।
গুজরাটে মোদির অর্থনৈতিক সাফল্যের মিথ
এটা সত্য যে, মোদির জমানায় বেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঘটেছে প্রদেশটিতে। অর্থনীতিতে বাৎসরিক গড় প্রবৃদ্ধির হার সেখানে ১০ শতাংশের বেশি। ভারতের শিল্পপণ্যের ১৬ ভাগ এখন জোগান দেয় গুজরাট। এমনকি মোদি দাবি করে থাকেন, তার আমলে কৃষি খাতেও ১০-১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। পুরো প্রদেশজুড়ে প্রায় ৫৫টি ‘স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ খোলা হয়েছে। বহু ধরনের সাবসিডির মাধ্যমে এসব জোনে প্রাইভেট বিনিয়োগ আকর্ষণ করছেন মোদি এবং তার জন্য বিজনেস ফ্রেন্ডলি রেগুলেটরি রিফর্মও করা হয়েছে ব্যাপকভাবে।
এর সবই সত্য। প্রশ্ন হলো, অর্থনৈতিক এসব সাফল্যের মূল সুবিধাভোগী কারা? সমাজের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সবাই কি এ থেকে লাভবান হচ্ছে? এসব প্রশ্নের পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যেহেতু পুরো অর্থনৈতিক কার্যক্রম সেখানে পরিচালনা করা হচ্ছে চূড়ান্ত প্রাইভেটাইজেশনের মাধ্যমে, ফলে এর সুফল সমাজের সবাই পায়নি বা পাচ্ছে না। স্রেফ পুঁজির স্ফীতি ও ব্যবসাই মুখ্য হয়ে উঠেছে।
যেমন- গুজরাটে কৃষিক্ষেত্রে যখন ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি হচ্ছে সেই একই সময় (২০০১-১১) প্রদেশজুড়ে কৃষিমজুরের সংখ্যা বেড়েছে ১৭ লাখ। এই কৃষিমজুররা আসলে আর কেউ নয়- সদ্য জমি হারানো খুদে চাষীর দল। পদ্ধতিগতভাবে সেখানে খুদে চাষীদের জমি নিয়ে তা তুলে দেওয়া হচ্ছে শিল্প বিনিয়োগকারীদের হাতে। যার কারণে তথাকথিত ‘ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি’র মাঝেই গ্রাম থেকে শহরে শ্রমজীবীদের অভিবাসন ব্যাপক বেড়ে গেছে।
এভাবে অন্যান্য খাতের কথাও বলা যায়। যেমন- গুজরাটে এ মুহূর্তে কর্পোরেট হাসপাতালগুলোর ব্যাপক বিনিয়োগ চলছে। বিখ্যাত সব হাসপাতালের উঁচু উঁচু অট্টালিকা উঠছে। কিন্তু গুজরাট হলো ভারতের সেই প্রদেশগুলোর একটি যেখানে জন্মকালীন শিশুমৃত্যু হার বেশ উঁচু; হাজারে ৪৪ জন (বাংলাদেশে যা ৪৭)।
একই ধরনের বৈপরীত্য দেখা যায় বিদ্যুতের ক্ষেত্রে। গুজরাটকে বলা হয় ভারতের একমাত্র বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত প্রদেশ। নিয়মিত পাশের প্রদেশগুলোতে প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিক্রি করে। কিন্তু প্রদেশটির গ্রামে লোডশেডিং নিয়মিত এক অভিজ্ঞতা। শহর-গ্রাম লোডশেডিংয়ের হার ১:৬। ভারতের যেসব প্রদেশে বিদ্যুতের দাম সর্বাধিক তাদের মধ্যেও রয়েছে গুজরাট।
কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ইত্যাদি সেক্টরের উপরোক্ত অভিজ্ঞতার কারণ মোদির অধীনে এই প্রদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা পুরোপুরি বেসরকারি খাতের কর্তৃত্বাধীন- বিনিয়োগকারীদের মোদি যে কোন উপায়ে কেবল মুনাফা করারই সুযোগ দিয়েছেন। সেজন্যই কর্পোরেটরা মোদিকে নিয়ে উল্লসিত- এমনকি তার অতি কুৎসিত মানবাধিকার রেকর্ড সত্ত্বেও।
‘গুজরাট মডেল’-এর এই অর্থনৈতিক অভিজ্ঞতা শিক্ষা হিসেবে এই ইঙ্গিতও স্পষ্ট করেছে, সংঘ পরিবারের ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ’-এর রাজনীতি প্রকৃতপক্ষে কাদের হাতে পুঁজির পুঞ্জিভবনকে উৎসাহ দেয়; অর্থাৎ ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ পুঁজির প্রশ্নকে কিভাবে মোকাবেলা করে; মানুষের কর্মসংস্থানের মানে তাদের কাছে কী; প্রবৃদ্ধির গল্পের আড়ালে ফ্যাসিবাদের অর্থনীতি হাজার হাজার একর কৃষি জমির অধিগ্রহণ ও লাখ লাখ মানুষের উদ্বাস্তু হওয়াকে কিভাবে গোপন করে- সর্বোপরি শ্রম অধিকারকে তারা কিভাবে দেখে?
মোদির শাসনামলে গুজরাটে অনেকবার বেশ ঘটা করে রোজগার মেলার আয়োজন করা হয়। বিশেষত ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সপ্তাহজুড়ে সমগ্র গুজরাটে এরকম মেলা হয় ৪৮৯টি এবং মোদির প্রশাসনের তরফ থেকে দাবি করা হয়, এসব মেলায় ৬৫ হাজার তরুণের চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে। এই প্রচারণার সত্যাসত্য জানতে তথ্যাধিকার আইনে গবেষক রোহিত প্রজাপতি ও ত্রুপতি শাহ গুজরাট প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানান। এ থেকে দেখা যায়, প্রশাসন মাত্র ৩২,৩৭২ জনের নাম দিতে পেরেছে। আরও দেখা যায়, যাদের ‘চাকরি’ দেয়া হয়েছে বলা হচ্ছে- তাদেরও কোন ‘এ্যাপয়নমেন্ট লেটার’ নয়- দেয়া হয়েছে ‘এমপ্লয়মেন্ট লেটার’। অথচ উপরোক্ত রোজগার মেলার আয়োজন করতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগের খরচ হয়েছে প্রায় ২ কোটি রুপি। জেলাভিত্তিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, আহমেদাবাদ জেলায় নিয়োগ পাওয়া ৪,৩৭০ জনের সবাই ‘এমপ্লয়মেন্ট লেটার’ পেয়েছেন শিক্ষানবিস হিসেবে- যাদের বেতন কাঠামো ১৪০০-১৯০০ রুপির মধ্যে। এভাবেই রাজ্য সরকার নিজের টাকায় মেলার আয়োজন করে কর্পোরেটদের সস্তা শ্রমিক সরবরাহ করছে।
গুজরাটে বিজেপির অর্থনৈতিক দর্শনের আরেকটি মৌলিক দিক হলো পরিবেশ প্রশ্নকে অগ্রাহ্য করা। বিনিয়োগ-আগ্রহী কর্পোরেটদের এটাও খুবই পছন্দ হয়েছে। প্রদেশটিতে এ মুহূর্তে প্রায় ৩০ হাজার ফ্যাক্টরি রয়েছে- যার মধ্যে ১৫ শতাংশের অধিক (hazardous chemical factories) এমন বর্জ্য নির্গমন করে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সারা ভারতে এইরূপ যত কারখানা রয়েছে গুজরাটেই আছে তার ৩০ ভাগ। বস্তুত এসবেরই ফসল হলো কথিত ‘গুজরাট মডেল’।
উল্লেখ্য, মোদি ব্রিগেডের তরফ থেকে নির্বাচনী প্রচারণা যুদ্ধে গুজরাটের অর্থনৈতিক কাহিনীকে প্রাধান্যে আনার চেষ্টা থাকলেও ঘুরেফিরে বারবারই সেখানে মোদির গণহত্যাকেন্দ্রিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়গুলো চলে আসছে।
যেগ ণহত্যার কোনো বিচার হয়নি
অনেকেরই হয়তো স্মৃতিতে আছে, গুজরাট গণহত্যার শুরু একটা ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডকে কেন্দ্র করে। ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোদরাহ নামক জায়গায় উল্লিখিত ট্রেন পুড়ে ৫৮ জন হিন্দু তীর্থযাত্রী মারা যায়। এ সময় কৌশলে এই মিথ্যা প্রচারণা ছড়িয়ে দেয়া হয়, মুসলমানরাই অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে। এর পরপরই সমগ্র গুজরাটজুড়ে মুসলমানদের হত্যালীলা শুরু হয়। দুই হাজারের অধিক মানুষ মারা যায় এতে। হাজার হাজার আহত হয় এবং পুরো প্রদেশজুড়ে মুসলমানদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়া হয়।
গুজরাটে ট্রেনে আগুন লাগা এবং মুসলমানদের পদ্ধতিগতভাবে হত্যার সময় মোদি ছিলেন প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী। সেসময় বহু আবেদন নিবেদন সত্ত্বেও মোদি প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে হত্যালীলা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার দীর্ঘ সাত বছর পর ২০০৯ সালের এপ্রিলে ভারতের সুপ্রীম কোর্ট গুজরাট হত্যালীলার তদন্তে একটি বিশেষ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয় এবং সেই অনুসন্ধান শেষে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে মোদিকে নির্দোষ বলে অভিহিত করা হয় তদন্ত দলের পক্ষ থেকে। তবে ভারতে আজও সুপ্রিমকোর্টের উল্লিখিত তদন্তের নিরপেক্ষতা ও যথার্থতা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক চলছে।
উল্লেখ্য, সাধারণভাবে ভারতে মুসলমান সমাজে দারিদ্র্য, অশিক্ষা ইত্যাদি বহুমাত্রিক বিপন্নতা বিদ্যমান। তবে এর মধ্যে গুজরাটের মুসলমানরা ছিল তুলনামূকভাবে ভালো অবস্থায়। ফলে ভারতজুড়ে নিজ সমাজের উন্নয়নধর্মী অভ্যন্তরীণ নানান উদ্যোগে গুজরাটের মুসলমানরা অর্থনৈতিকভাবে নেতৃত্ব দিতেন। ২০০২ সালের হামলার সময় এটাও দেখা যায়, হাতে মুদ্রিত তালিকা ধরে ধরে আক্রমণকারীরা রাজ্যে মুসলমানদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আক্রমণ করছে। এর পেছনে যে বিশেষ আর্থ-সামাজিক বিবেচনা কাজ করেছে সেটা সহজেই অনুমেয়।
এই অভিজ্ঞতা থেকেই মোদির আসন্ন বিজয়কে ঘিরে পুরো ভারতে মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীগুলোর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে এখন। আরএসএস ও বিজেপির অধীনে হিন্দুত্ববাদী শাসনে বাড়তি বঞ্চনা ও লাঞ্চনার আশঙ্কা করছেন শ্রমিক জনগোষ্ঠীও। ধর্মভিত্তিক ও কর্পোরেটমুখী রাজনীতির এই ঢেউ বহুবর্ণ ও বহুধর্মের দক্ষিণ এশিয়ার জন্য কী পরিণতি ডেকে আনছে সেটা ভেবে উদ্বিগ্ন আশপাশের দেশগুলোর মানুষও।
আলতাফ পারভেজ : লেখক ও গবেষক
পাঠকের মতামত:
- শনিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
- রাতের আঁধারে লাশ দাফন বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি মিল্টন: ডিবি
- ওমরাহ পালনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ছেন মির্জা ফখরুল
- দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা মিললো কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির
- "যুদ্ধকে ‘না’ বলার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি"
- ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের জামিন
- আওয়ামী লীগ মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি: প্রধানমন্ত্রী
- শেষ ম্যাচে উইকেট ছাড়াই থেকে আইপিএল মিশন শেষ করলেন মুস্তাফিজ
- ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ হামলায় নিহত ৫
- চুয়াডাঙ্গায় ৭০ বিঘা পানের বরজে অগ্নিকাণ্ড
- প্রচন্ড মহাসড়কে চীনে ২৪ জন নিহত
- ইসরায়লের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করছে কলম্বিয়া
- এশিয়ার সেরা ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই বুয়েট- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে
- মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে রাতেই তিন মামলা
- "মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে"
- দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন আজ
- এবার ঢাবির থেকে এগিয়ে এনএসইউ
- মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার
- ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে আরও ছয় দেশে
- নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি দেখতে আ.লীগকে বিজেপির আমন্ত্রণ
- এপ্রিল মাসে প্রবাসী আয় ১৯০ কোটি ৮০ মার্কিন ডলার
- শুক্রবার প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি
- "চিকিৎসকদের কোনো প্রকার অবহেলা সহ্য করা হবে না"
- বিএনপির হাতে শ্রমিকের রক্তের দাগ: ওবায়দুল কাদের
- বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠবেই: মির্জা ফখরুল
- জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এনএসইউ'ই সুনাম ধরে রেখেছে
- ইসলামে ন্যায্য মজুরি শ্রমিকের অধিকার
- সময়ের ঘোড়দৌড় ও একজন সাদা শ্রমিক
- যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় কেন পহেলা মে শ্রমিক দিবস নয়
- মে দিবস ও বাংলাদেশের শ্রমিক শ্রেণি
- পাল্টে যাওয়া শ্রমিক শ্রেণি: ভাবতে হবে নতুন করে
- রোদে পোড়া শ্রমিক জানে না মে দিবস কি
- কেন এতো মহান মে দিবস
- রক্তদাতারা মানবিক গুণের অধিকারী: কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা
- ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ প্রকাশ
- কেনিয়ায় বন্যায় আরও ৬৬ জনের মৃত্যু
- ভারতের কাছে বৃষ্টি আইনে ১৯ রানে হারলো বাংলাদেশ
- আবারও জ্বালানি তেলের দাম বাড়লো
- বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা
- সরকার শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে: রাষ্ট্রপতি
- সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হবে
- আজ মহান মে দিবস
- আজ রাত থেকে তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে
- থাইল্যান্ড সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী
- ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে রাজী ইউরোপীয় ইউনিয়ন
- রেকর্ড তাপমাত্রা যশোরে ৪৩.৮
- চলমান হিট ওয়েভে স্বস্তি দিবে মিনিস্টার ফ্যান
- জি কে শামীমের আইনজীবীকে শাস্তি দিল আদালত
- যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীদের হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তিন কর্মকর্তা নিহত
- লেভানদোভস্কির গোলে বার্সার জয়
- নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশণা
- যেসব জেলায় স্কুল- কলেজ বন্ধ আজ
- "শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে বিএনপি সংকল্পবদ্ধ"
- দেশের পথে এমভি আবদুল্লাহ
- ৭ বছরে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বেড়েছে মহাখালী ও গুলিস্তানে
- সকালে ৩৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফিল ছিল ৪২
- দ্বিতীয় ধাপের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ
- চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস
- ইসরায়েলের হামাসের রকেট হামলা, গাজায় সেনা পাঠাবে যুক্তরাষ্ট
- সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ
- বিএনপি সিম্প্যাথি কার্ড খেলার অপচেষ্টা করছে: ওবায়দুল কাদের
- স্কুল ও মাদ্রাসার ক্লাস বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ
- হজের খরচ আগামী বছর কমে আসবে: ধর্মমন্ত্রী
- বাংলাদেশ থেকে আম নিতে চায় চীন: কৃষিমন্ত্রী
- হাইকোর্টের আদেশ আপিল বিভাগে নিয়ে যাবো: শিক্ষামন্ত্রী
- টানা ছয় দফা কমলো স্বর্ণের দাম
- তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় পানির সংকট
- নাভানা ফার্মার মুনাফা বেড়েছে
- মুনাফা থেকে লোকসানে আইসিবি
- গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ পেলো ওয়ালটন
- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড এর ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত
- ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেল ইসলামী ব্যাংক
- ওয়ালটন এসি কিনে মিলিয়নিয়ার গাজীপুরের ব্যবসায়ী আব্দুল আলী
- ইসলামী ব্যাংকের নোয়াখালী জোনের কর্মকর্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত
- পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ১০ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকার বেশি
- মার্কিন নির্বাচনে চীন হস্তক্ষেপ করতে চাইছে: ব্লিঙ্কেন
- ফের সারাদেশে হিট এলার্ট জারি
- যুক্তরাষ্ট্র গেলেন বিএনপি নেতা আমির খসরু
- কী করছেন হিট অফিসার
- তাপপ্রবাহের সড়কে কৃত্তিম বৃষ্টি
- এসির টেম্পারেচার কত হলে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো
- বিনিয়োগকারী সংগঠনের নামে শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন চাঁদাবাজী,ধরা পড়লো তিনজন
- "পরিষ্কার ধারণা ছিলো, বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না"
- রোহিত- কোহলির অবসর নিয়ে যা বললেন যুবরাজ
- জিম্মিকে ফিরিয়ে নিতে ১৮ দেশের বিবৃতি, যে বার্তা দিল হামাস
- হিট অফিসারের পরামর্শে রিকশাচালকদের আধা লিটার পানি দিচ্ছে ডিএনসিসি
- জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এনএসইউ'ই সুনাম ধরে রেখেছে
- বিএনপি সিম্প্যাথি কার্ড খেলার অপচেষ্টা করছে: ওবায়দুল কাদের
- বাংলাদেশ- ভারত সিরিজ নিয়ে বিসিবির সুখবর
- দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগির, মাছের বাজার চড়া
- তীব্র তাপদাহে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনায় নতুন নির্দেশনা
- এবার ঢাবির থেকে এগিয়ে এনএসইউ
- বিতর্কিত ক্যাচের ছবি দিয়ে যা বোঝালেন মুশফিক
- ওলামা দলের ৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা
- ৭ বছরে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বেড়েছে মহাখালী ও গুলিস্তানে
- ইসরাইলকে থামাতে পারে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র: মাহমুদ আব্বাস
- তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে, মে মাসের শুরুতে হতে পারে বৃষ্টি
- ওমরা পালনে ইচ্ছুক মুসল্লিদের জন্য সৌদি আরবের সুখবর
- থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা