এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিকেলে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে দশ লক্ষাধিক বাঙালির ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানের মধ্যে তাঁর স্বাভাবসুলভ জলদগম্ভীর কণ্ঠে ঘোষণা করেন: এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
মুক্তির এই বাণী শোনার জন্য সকাল থেকে দেশের দূরদূরান্তের মানুষ দলে দলে পায়ে হেঁটে, বাসে-লঞ্চে-ট্রেনে চেপে রেসকোর্স (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে সমবেত হতে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে নারী-পুরুষের স্রোত সয়লাব হয়ে যায় ঘোড়দৌড়ের বিশাল ময়দান। বয়স, পেশা, সামাজিক মর্যাদা ভুলে গিয়ে সর্বস্তরের মানুষ হাতে বাঁশের লাঠি, কণ্ঠে ‘জয় লাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনি আর চোখে মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে এক ও অভিন্ন লক্ষ্যে নেতার নির্দেশ শোনার জন্য উপস্থিত হয়।
বেলা সোয়া তিনটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সভামঞ্চে এস উপস্থিত হন। সফেদ পাজামা-পাঞ্জাবি আর তাঁর বৈশিষ্ট্য সূচক কালো কোট পরিহিত শেখ মুজিব মঞ্চে এস দাঁড়ালে বীর জনতা করতালি ও ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে অভিনন্দন জানায়। বঙ্গবন্ধুও হাত নেড়ে অভিনন্দন জানান জনতার সমুদ্রকে।
ঢাকা বেতারে বঙ্গবন্ধুর রেসকোর্সের ঐতিহাসিক ভাষণ রিলে না করার প্রতিবাদে বেতারে কর্মরত বাঙালি কর্মচারীরা কাজ বর্জনের দরুন বিকেল থেকে ঢাকা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রিলে করার দাবির প্রেক্ষিত্রে ঢাকা বেতার কর্তৃপক্ষ পূর্বে তা রিলে করার সিদ্ধান্ত বেতার মারফত ঘোষণা করলেও শেষ মুহূর্তে বাতিল করে দেয়। বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ রিলে করা হবে- এ ঘোষণার পর সারা বাংলার শ্রোতারা অধীর আগ্রহে রেডিও সেট নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। বেলা ২টা ১০ মিনিট থেকে বেলা ৩টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ঢাকা বেতারে দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রিলে করার মুহূর্তেই আকস্মিকভাবেই ঢাকা বেতারের তৃতীয় অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সামরিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রিলে করতে না দেয়ার প্রতিবাদে ঢাকা বেতারের কর্মীরা সহযোগিতা করতে অস্বীকার করলে বেতার কেন্দ্রটি অচল হয়ে পড়ে। তখন কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েই অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর রেসকোর্সের পূর্ণ ভাষণ ঢাকা বেতারে প্রচার করা না হলে বেতার কর্মীরা কাজে যোগদান করবেন না বলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন। গভীর রাতে সামরিক কর্তৃপক্ষ ঢাকা বেতারে বঙ্গবন্ধুর রেসকোর্স ময়দানে প্রদত্ত ভাষণের পূর্ণ বিবরণ প্রচারের অনুমতি দেয়। পরদিন সকালে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দিয়েই ঢাকা বেতার কেন্দ্র পুনরায় চালু হয়।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর পরই ঢাকায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান সামরিক শাসন প্রত্যাহার এবং অনতিবিলম্বে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ শাসন করার অধিকার আছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে তাঁর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে এবং তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য দেশের শাসনতন্ত্র তৈরি করবেন। আসগর খান বলেন, ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদ অধিবেশনে যোগদান সম্পর্কে আওয়ামী লীগ প্রধান আজ যে শর্ত দিয়েছেন তা ন্যায়সঙ্গত, উপযুক্ত, সুষ্ঠু ও বৈধ।
রাতে বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান কর্তৃক ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি প্রদান করেন। সংবাদপত্রে প্রদত্ত বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার বেতার ভাষণের জবাবে বলেন, ১ মার্চ আকস্মিকভাবে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আকস্মিক ও অবাঞ্ছিতভাবে স্থগিত ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদরত নিরস্ত্র বেসামরিক অধিবাসীদের উপর ব্যাপকভাবে গুলি চালানো হয়েছে। গত সপ্তাহে যারা প্রাণ দিয়েছেন তারা শহীদ হয়েছেন। পরিষদ অধিবেশন খামখেয়ালিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করার ফলে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ করতে গিয়ে তারা মৃত্যুবরণ করেছেন।
বঙ্গবন্ধু বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া যাকে ‘সর্বনিম্ন শক্তি প্রয়োগ’ বলেছেন তাতেই যদি হাজার হাজার লোক হতাহত হতে পারে, তাহলে তার অভিহিত ‘পর্যাপ্ত শক্তি প্রয়োগ’-এর অর্থ কি আমরা সম্পূর্ণ নির্মূল হয়ে যাব?’ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যদি আন্তরিকভাবে মনে করেন, জনসাধারণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সার্বভৌম সংস্থা হিসেবে জাতীয় পরিষদকে কার্যকর করা উচিত, তাহলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাসমূহ অবিলম্বে প্রতিপালিত হতে হবে-
১. সামরিক বাহিনীর সকল লোককে অবিলম্বে তাদের নিজ নিজ ছাউনিতে ফিরিয়ে নিতে হবে।
২. বেসামরিক জনসাধারণের উপর অবিলম্বে গুলিবর্ষণ বন্ধ করতে হবে এবং এ মুহূর্তে হতে একটি বুলেটও যাতে তাদের প্রতি বর্ষিত না হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. সামরিক সমাবেশ এবং পশ্চিম পাকিস্তান হতে বিপুলসংখ্যক সামরিক বাহিনীর লোককে এখানে আনা বন্ধ করতে হবে।
৪. বাংলাদেশ সরকার যন্ত্রের বিভিন্ন শাখার কাজে সামরিক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ করা চলবে না এবং সরকারি অফিসার ও কর্মচারীদের ব্যাপারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ হতে বিরত থাকার নির্দেশ দিতে হবে।
৫. আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ভার সম্পূর্ণভাবে পুলিশ বা বাঙালী ইপিআর-এর উপর ন্যস্ত করতে হবে এবং যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানে আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের সাহায্য করবে।
বঙ্গবন্ধু বলেন, সামরিকভাবে মোকাবেলার নীতি যদি অব্যাহত থাকে এবং নিরস্ত্র জনসাধারণ যদি বুলেটের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে থাকে, তাহলে জাতীয় পরিষদ যে কখনই কাজ করতে পারবে না এতে আর সন্দেহ থাকা উচিত নয়।
রেসকোর্সে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পূর্ণ বিবরণ
ভায়েরা আমার,
আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে।
আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়। বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়। বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়। কী অন্যায় করেছিলাম?
নির্বাচনের পরে বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণভাবে আমাকে, আওয়ামী লীগকে ভোট দেন। আমাদের ন্যাশনাল এসেম্বলি বসবে, আমরা সেখানে শাসনতন্ত্র তৈরি করবো এবং এদেশকে আমরা গড়ে তুলবো। এদেশের মানুষ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, তেইশ বছরের করুণ ইতিহাস, বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। তেইশ বছরের ইতিহাস মুমূর্ষু নর-নারীর আর্তনাদের ইতিহাস, বাংলার ইতিহাস এ দেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস।
১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আয়ুব খান মার্শাল ল’ জারি করে ১০ বছর পর্যন্ত আমাদের গোলাম করে রেখেছে। ১৯৬৬ সালে ছয় দফার আন্দোলনে ৭ই জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯-এ আন্দোলনে আয়ুব খানের পতন হওয়ার পরে যখন ইয়াহিয়া খান সাহেব সরকার নিলেন- তিনি বললেন, দেশে শাসনতন্ত্র দেবেন, গণতন্ত্র দেবেন। আমরা মেনে নিলাম।
তারপরে অনেক ইতিহাস হয়ে গেলো। নির্বাচন হলো। আমি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সাহেবের সঙ্গে দেখা করেছি। আমি শুধু বাংলা নয়, পাকিস্তানের মেজরিটি পার্টির নেতা হিসাবে তাকে অনুরোধ করলাম- ১৫ই ফেব্রুয়ারি তারিখে আপনি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন দেন।
তিনি আমার কথা রাখলেন না। তিনি রাখলেন ভুট্টো সাহেবের কথা। তিনি বললেন, প্রথম সপ্তাহে মার্চ মাসে হবে।
আমরা বললাম, ঠিক আছে, আমরা এসেম্বলিতে বসবো। আমি বললাম, এসেম্বলির মধ্যে আলোচনা করবো। এমনকি আমি এ পর্যন্ত বললাম, যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে- আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও একজন যদিও সে হয়, তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব।
জনাব ভুট্টো সাহেব এখানে এসেছিলেন। আলোচনা করলেন। বলে গেলেন, আলোচনার দরজা বন্ধ না। আরও আলোচনা হবে। তারপরে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ দলের সঙ্গে আলাপ করলাম। আপনারা আসুন, বসুন, আমরা আলাপ করে শাসনতন্ত্র তৈরি করি। তিনি বললেন, পশ্চিম পাকিস্তানের মেম্বাররা যদি এখানে আসে তাহলে কসাইখানা হবে এসেম্বলি। তিনি বললেন, যে যাবে তাকে মেরে ফেলে দেয়া হবে। যদি কেউ এসেম্বলিতে আসে তাহলে পেশোয়ার থেকে করাচি পর্যন্ত জোর করে বন্ধ করা হবে।
আমি বললাম, এসেম্বলি চলবে। তারপরে এক তারিখে এসেম্বলি বন্ধ করে দেওয়া হলো। ইয়াহিয়া খান সাহেব প্রেসিডেন্ট হিসেবে এসেম্বলি ডেকেছিলেন। আমি বললাম যে, আমি যাবো। ভুট্টো সাহেব বললেন, তিনি যাবেন না। পঁয়ত্রিশজন সদস্য পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এখানে আসলেন। তারপর হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হলো, দোষ দেওয়া হলো বাংলার মানুষকে, দোষ দেওয়া হলো আমাকে। বন্ধ করে দেয়ার পরে এদেশের মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠল।
আমি বললাম, শান্তিপূর্ণভাবে আপনারা হরতাল পালন করেন। আমি বললাম, আপনারা কলকারখানা সব কিছু বন্ধ করে দেন। জনগণ সাড়া দিলো। আপন ইচ্ছায় জনগণ রাস্তায় বেরিয়ে পড়লো, তারা শান্তিপূর্ণভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাবার জন্য স্থির প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো।
কি পেলাম আমরা? আমার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরিব-দুঃখী নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে। তার বুকের ওপরে হচ্ছে গুলি। আমরা পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু। আমরা বাঙালিরা যখনই ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা করেছি তখনই তারা আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
টেলিফোনে আমার সঙ্গে তার কথা হয়। তাঁকে আমি বলেছিলাম, জেনারেল ইয়াহিয়া খান সাহেব, আপনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, দেখে যান কিভাবে আমার গরিবের ওপরে, আমার বাংলার মানুষের বুকের ওপর গুলি করা হয়েছে। কী করে আমার মায়ের কোল খালি করা হয়েছে। কী করে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আপনি আসুন, দেখুন, বিচার করুন। তিনি বললেন, আমি নাকি স্বীকার করেছি যে, ১০ তারিখে রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স হবে।
আমি তো অনেক আগেই বলে দিয়েছি, কিসের আর টিসি? কার সঙ্গে বসবো? যারা আমার মানুষের বুকের রক্ত নিয়েছে, তাদের সঙ্গে বসবো? হঠাৎ আমার সঙ্গে পরামর্শ না করে পাঁচ ঘণ্টা গোপনে বৈঠক করে যে বক্তৃতা তিনি করেছেন, সমস্ত দোষ তিনি আমার ওপরে দিয়েছেন, বাংলার মানুষের ওপরে দিয়েছেন।
ভায়েরা আমার,
পঁচিশ তারিখে এসেম্বলি কল করেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০ তারিখে বলে দিয়েছি, ওই শহীদের রক্তের উপর পা দিয়ে আর টিসিতে মুজিবুর রহমান যোগদান করতে পারে না।
এসেম্বলি কল করেছেন-আমার দাবি মানতে হবে। সামরিক আইন- মার্শাল ল’ উইথড্র করতে হবে। সমস্ত সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফেরত নিতে হবে। যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে। আর জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
তারপর বিবেচনা করে দেখবো, আমরা এসেম্বলিতে বসতে পারবো কী পারবো না। এর পূর্বে এসেম্বলিতে বসতে আমরা পারি না। আমি, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এদেশের মানুষের অধিকার চাই। আমি পরিষ্কার অক্ষরে বলে দেবার চাই যে, আজ থেকে এই বাংলাদেশে কোর্ট-কাচারি, আদালত-ফৌজদারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। গরিবের যাতে কষ্ট না হয়, যাতে আমার মানুষ কষ্ট না করে- সেই জন্য যে সমস্ত অন্য অন্য জিনিসগুলো আছে সেগুলোর হরতাল কাল থেকে চলবে না। রিকশা, ঘোড়ারগাড়ি, রেল চলবে, লঞ্চ চলবে, শুধু- সেক্রেটারিয়েট, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজকোর্ট, সেমি গভর্নমেন্ট দফতরগুলো, ওয়াপদা কোন কিছু চলবে না।
আটাশ তারিখে কর্মচারীরা যেয়ে বেতন নিয়ে আসবেন। এরপরে যদি বেতন দেওয়া না হয়, আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়- তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু- আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে। আমরা ভাতে মারবো, আমরা পানিতে মারবো। তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাকো কেউ তোমাদের কিছু বলবে না।
কিন্তু আর আমার বুকের ওপর গুলি চালাবার চেষ্টা করো না। সাত কোটি মানুষকে দাবায়া রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবেনা।
আর যে সমস্ত লোক শহীদ হয়েছে, আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, আমরা আওয়ামী লীগের থেকে যদ্দুর পারি তাদের সাহায্য করতে চেষ্টা করবো। যারা পারেন আমাদের রিলিফ কমিটিতে সামান্য টাকা-পয়সা পৌঁছে দেবেন। আর এই সাত দিন হরতালে যে সমস্ত শ্রমিক ভাইয়েরা যোগদান করেছে, প্রত্যেকটা শিল্পের মালিক তাদের বেতন পৌঁছে দেবেন।
সরকারি কর্মচারীদের বলি- আমি যা বলি তা মানতে হবে। যে পর্যন্ত আমার এই দেশের মুক্তি না হবে, খাজনা-ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হলো। কেউ দেবে না।
মনে রাখবেন, শত্রুবাহিনী ঢুকেছে, নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করবে। লুটতরাজ করবে। এই বাংলায় হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি-অবাঙালী যারা আছে তারা আমাদের ভাই। তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের উপর। আমাদের যেন বদনাম না হয়।
মনে রাখবেন। রেডিও-টেলিভিশনের কর্মচারীরা, যদি রেডিওতে আমাদের কথা না শোনে তাহলে কোন বাঙালী রেডিও স্টেশনে যাবে না। যদি টেলিভিশন আমাদের নিউজ না দেয়, কোন বাঙালি টেলিভিশনে যাবেন না।
দুই ঘণ্টা ব্যাংক খোলা থাকবে, যাতে মানুষ তাদের মায়নাপত্র নেবার পারে। কিন্তু পূর্ব বাংলা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে এক পয়সাও চালান হতে পারবে না।
টেলিফোন, টেলিগ্রাম আমাদের এই পূর্ব বাংলায় চলবে এবং বিদেশের সঙ্গে নিউজ পাঠাতে চান আপনারা পাঠাবেন। কিন্তু এ দেশের মানুষকে যদি খতম করার চেষ্টা করা হয়- বাঙালিরা বুঝেসুঝে কাজ করবেন।
প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেবো। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।
গ্রন্থনা : সাঈদ শিপন
(দ্য রিপোর্ট/এসএস/এনআই/মার্চ ০৭, ২০১৬)
পাঠকের মতামত:
- ৬ মেডিকেল কলেজের নতুন নামকরণ, বাদ শেখ মুজিব-হাসিনার নাম
- ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি হিজবুল্লাহ প্রধানের
- বাংলাদেশ আবারও চ্যাম্পিয়ন
- আফগানিস্তান সিরিজে থাকছেন না, বিসিবিকে জানিয়েছেন সাকিব
- কমনওয়েলথে নতুন প্রজন্মের ভূমিকা তুলে ধরলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অব্যাহতি পেলেন পিনাকী ভট্টাচার্য
- তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বাতিল
- ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি
- শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে গুমের মামলা
- ইসি গঠনে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপন জারি
- পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সেনাবাহিনী-পুলিশের গাড়িতে আগুন
- মিরপুরের সাবেক ডিসি জসিম গ্রেপ্তার
- যাদের অবশ্যই আয়কর রিটার্ন দিতে হবে
- ‘ব্যাংকের মতো পুঁজিবাজারে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন’
- রোনালদো দানব, মেসি দানবের বাবা : গার্দিওলা
- আমিরাতের শীর্ষ কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী: রাষ্ট্রদূত
- গণতন্ত্র নবায়নে বাংলাদেশের জন্য এখন ঐতিহাসিক সুযোগ: ভলকার তুর্ক
- ইসি গঠনে সার্চ কমিটির প্রধান হচ্ছেন বিচারপতি জুবায়ের রহমান
- ২০ সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
- সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ গ্রেপ্তার
- আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের আমরা যেন ভুলে না যাই: নাহিদ
- "স্বৈরাচারের দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রেখে লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয়"
- ছাত্র-জনতার আন্দোলন: সাকিবের বাবার নেতৃত্বে ২ হত্যার অভিযোগ!
- ফের সায়েন্সল্যাবে অবরোধের ডাক ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের
- ভিনি-বেলিংহ্যামকে টপকে ব্যালন ডি’অর জিতলেন রদ্রি
- মাহিদুলের অভিষেক, সিরিজ বাঁচাতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
- গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় লেবাননে নিহত ৬০
- ইউটিউব চ্যানেল ফিরে পেলেন মিজানুর রহমান আজহারী
- খরচ কমিয়ে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
- রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় আনসারীকে মিলারের অভিনন্দন
- ঢাকা সফরে এসেছেন ভলকার তুর্ক
- ঢাকা সফরে এসেছেন ভলকার তুর্ক
- স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু ১২ নভেম্বর, লটারি ডিসেম্বরে
- ছাত্রলীগ, ২৫২ এসআই ও ১৭ বিলিয়ন ডলার লুট নিয়ে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র
- টেকনাফ সীমান্তে ফের বিস্ফোরণের শব্দ, জনমনে আতঙ্ক
- পুঁজিবাজারে দরপতন: মতিঝিলে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ
- আঘাত পেয়েছেন জাকের, চট্টগ্রাম টেস্টের দলে অঙ্কন
- হাসিনার ঘনিষ্ঠরা ব্যাংকখাত থেকে লুট করেছে ২ লাখ কোটি টাকা: গভর্নর
- আ.লীগের রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার নেই: জামায়াত আমির
- পাশের দেশ থেকে হাসিনা রক্তপাতের উসকানি দিচ্ছেন: রিজভী
- আ. লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ১১টি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ চেয়ে রিট
- পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হচ্ছে জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি
- সংস্কার প্রস্তাব নতুন নয়, ছয় বছর আগেই তা খালেদা জিয়া দিয়েছেন: খসরু
- "গণভবন জাদুঘরে আয়নাঘরের রেপ্লিকা থাকা উচিত"
- বিশ্বমঞ্চে জেসিয়া, পোশাকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান
- ‘ভয়ের’ মোহাম্মদপুরে ‘অভয়’ দিয়ে মাঠে নিরাপত্তা বাহিনী
- ‘ফখরের বাদ পড়ার পেছনে ফিটনেসই বড় ইস্যু’
- এবারও সাফের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেপাল
- "আমি ফেরারির মতো ছুটছি, যার সামনে কোনো ভবিষ্যৎ নেই"
- প্রতিদিন প্রচুর ভিসা ইস্যু করছে সৌদি দূতাবাস: রাষ্ট্রদূত
- ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৫৩, লেবাননে ২১
- ‘গোল্ডেন ফাইবার অব বাংলাদেশ’ নামে পাটের জিআই হবে: সাখাওয়াত
- ২৬ দিনে প্রবাসী আয় ২৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা
- ৫ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভিসি
- সংস্কার শেষে নির্বাচন দেবে অন্তর্বর্তী সরকার, প্রত্যাশা ইইউয়ের
- রাষ্ট্রপতির অপসারণ এটা অনেক বড় একটা সিদ্ধান্ত: সৈয়দা রিজওয়ানা
- বিচার বিভাগের পৃথক সচিবালয় গঠনের প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে
- সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে : সালাহউদ্দিন
- সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন গ্রেপ্তার
- "ষড়যন্ত্রকারীর কোনো ষড়যন্ত্র আর বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না"
- উগ্রপন্থি সংগঠনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের নেই
- "হটকারী সিদ্ধান্ত না নিয়ে সংবিধান অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে চায় বিএনপি"
- ইসরায়েলে ট্রাক হামলায় আহত ৩৫
- ডেঙ্গুতে আরো ৬ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১২৪৮
- পুঁজিবাজারে বড় পতন, বিনিয়োগকারীদের মানববন্ধন
- অপরাধীদের ‘স্বর্গরাজ্য’ মোহাম্মদপুর, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
- হিজবুল্লাহর কোন ধরণের ড্রোন নেতানিয়াহুর বাড়িতে আঘাত হানে?
- সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল
- "সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করা যাবে না"
- "মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হবে না"
- তিন দিনের আলটিমেটাম সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের
- ছাত্র আন্দোলনে আহত ৮৬৭ জন দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসাধীন
- ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন, তাদের কোনো রাজনৈতিক অধিকার নেই: আইজিপি
- লেবানন থেকে আরও ৩০ বাংলাদেশি ফিরবেন সোমবার
- "রাষ্ট্রপতির অপসারণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপি"
- ডিএসইর ফিক্স সার্টিফিকেশন পেলো ৬ ব্রোকারেজ হাউজ
- "অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে হবে"
- মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হবে না: সেনাপ্রধান
- শেখ হাসিনা আশ্রয় নেওয়ার পর পুতুলকেও নিরাপত্তা দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ
- জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি হবে ২৪ এর গণবিপ্লব: ডা. শফিকুর রহমান
- শেখ পরিবারের সদস্য হাসানাত আব্দুল্লাহর ছেলে মঈন গ্রেপ্তার
- বিপ্লবী সরকার গঠন না করার কারণ জানালেন আসিফ নজরুল
- ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন, তাদের কোনো রাজনৈতিক অধিকার নেই: আইজিপি
- কড়া নিরাপত্তায় নয়াদিল্লির বাংলোয় আছেন হাসিনা
- "রাষ্ট্রপতির অপসারণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপি"
- ছাত্র আন্দোলনে আহত ৮৬৭ জন দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসাধীন
- এক মাসে রিজার্ভ বাড়ল ২৪ কোটি ডলার
- রাতে দেশে ফিরছেন ফখরুল
- নিষিদ্ধ সংগঠনের কেউ সরকারি চাকরি পাবে না: আসিফ মাহমুদ
- গিরগিটির মতো ভুয়া সমন্বয়ক তৈরি হয়েছে: সারজিস
- রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে
- সংবাদমাধ্যমে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের প্রচারণা না চালানোর আহ্বান
- প্রথমবারের মতো বাস রপ্তানীর ঐতিহাসিক কার্যক্রম শুরু করেছে ইফাদ অটোস
- সপ্তাহে ৩ পণ্যের দাম কমলেও বেড়েছে ৭টি
- মিনিস্টারের মাইক্রোওয়েভ ওভেনেই করা যায় বেকিং এবং গ্রিলিং
- সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে : সালাহউদ্দিন
- ইরানে জুমার খতিবকে গুলি করে হত্যা
- ঢাকা সফরে এসেছেন ভলকার তুর্ক
- সংবিধান নামে যেটা আছে সেটা হাসিনার গার্বেজ : মাহমুদুর রহমান
- অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান