thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১,  ২৮ রবিউস সানি 1446

হেরেও আগমনী বার্তা দিল বাংলাদেশ

২০১৬ মার্চ ০৭ ০১:২৩:২৪
হেরেও আগমনী বার্তা দিল বাংলাদেশ

খাদেমুল ইসলাম, দ্য রিপোর্ট : ঘড়িতে তখন রাত ১২টা। তবে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সে নিয়ে যেন কোনো ভাবনা নেই। বাংলাদেশের নিয়তিতে হারটাই যে লেখা হতে যাচ্ছে, তা বেশ খানিক্ষণ আগেই আঁচ করা গিয়েছিল। তাতে কি? যুদ্ধ জয়ের মতো যারা ফাইনাল ম্যাচের টিকিট জয় করেছেন, তারা শেষ বল পর্যন্ত না দেখে মাঠ ছাড়তে নারাজ। ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপ টি২০-তে ফাইনালে বাংলাদেশ হেরেছে, তাতে অপ্রাপ্তির বেদনা আছে। তবে মুখ গোমরা করে কান্নার কিছু নেই। কারণ টি২০-তে আন্ডারডগ বাংলাদেশের ফাইনালে ওঠার মধ্যেই বড় প্রাপ্তি হয়ে গেছে। এখন বাংলাদেশ যে শুধু ওয়ানডেতে নয়, টি২০-তেও যে কোনো দলের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে সে বার্তাও পেয়ে গেছে ক্রিকেট বিশ্ব।

ক্যালেন্ডারটা ঘুরিয়ে পেছনে নিলে শেরে বাংলায় পরিবেশটা ভিন্ন হতো। চার বছর আগে সে দৃশ্যপট এখানেই মঞ্চায়িত হয়েছিল। ২০১২ সালের ২২ মার্চ পাকিস্তানের কাছে ফাইনালে হারের পর সাকিব-মুশফিক যুগলবেঁধে কেঁদেছিলেন। এবার কিন্তু দলের আচরণে রীতিমতো পরিপক্কতা লক্ষ্য করা গেল। বড় দলগুলোর মতোই ফাইনাল হেরে স্বাভাবিকভাবেই মাঠ ছাড়ল মাশরাফির নেতৃত্বে টাইগার বাহিনী।

একাদশ এশিয়া কাপ, দশম ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও তারপর টানা চার ওয়ানডে সিরিজ জয়; সবমিলিয়ে ওডিআই ফরম্যাটে বাংলাদেশকে গণনায় ধরতে শুরু করেছে ক্রিকেট বিশ্ব। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতাও অর্জন করেছে তারা। তবে টি২০ ফরম্যাটের কারণে এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে নিয়ে তেমন কোনো স্বপ্ন ছিল না। ভারতের কাছে ৪৫ রানের হারে শুরুর পর আশাটা যেন আরও ফিকে হতে থাকে।

কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে জিতে আত্মবিশ্বাসের পারদ খানিকটা ঊর্ধ্বমুখী করে বাংলাদেশ। আর শ্রীলঙ্কাকে পরের ম্যাচে হারিয়ে ফাইনালে খেলাটা তখন স্বপ্ন থেকে বাস্তবে ধরা দিতে থাকে। সবশেষ ২ মার্চ পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিতই করে ফেলে মাশরাফি বাহিনী। তবে রবিবার ফাইনালে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম এশিয়া সেরা হওয়ার স্বপ্ন আবারো ভঙ্গ হয়।

বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই করে নির্ধারিত সময় থেকে দুই ঘণ্টা পর শুরু হয় ম্যাচ। টস ভাগ্যে মাশরাফির হারে সমর্থকরা হতাশই হয়েছিলেন। তবে মাহমুদউল্লাহর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে (১৩ বলে দুই বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারিতে ৩৩ রান) ১২০ রানের লড়াকু স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারেই রোহিত শর্মাকে সাজঘরে ফিরিয়ে আল-আমিন একটা লড়াকু ম্যাচের আভাসই দিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় উইকেট তাসকিন তুলে নেওয়ার আগে স্কোরবোর্ডে ৯৪ রান যোগ করেন বিরাট কোহলি ও শিখর ধাওয়ান। যতোক্ষণে ধাওয়ান সৌম্যর হাতে তাসকিনের বলে ধরা পড়েন ততোক্ষণে ভারতের দলীয় স্কোর একশ ছুঁই ছুঁই। আর ৪৪ বল থেকে ৯টি চার ও একটি ছক্কার মারে ৬০ রান করেন ধাওয়ান, হয়েছেন ম্যাচসেরাও। ভারতের দ্বিতীয় উইকেট যতোক্ষণে পতন হয়েছে ততোক্ষণে ম্যাচ যে বাংলাদেশের হাতছাড়া হয়ে গেছে, তা পরিষ্কারই ছিল।

একদিন পরই ভারতে শুরু হবে টি২০ বিশ্বকাপ। যেখানে বাংলাদেশ ৯ মার্চ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে প্রথম রাউন্ডে। এই পর্বে খেলবে আয়ারল্যান্ড ও ওমানের বিপক্ষে। সেই পর্ব উৎরে যেতে পারলে সুপার টেনে বাংলাদেশ যুক্ত হবে গ্রুপ-২ এর সঙ্গে। শক্তিশালী এই গ্রুপে বাংলাদেশের মোকাবেলা করতে হবে ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে।

তার আগেই বাংলাদেশ সাব্বির রহমান, আল-আমিন হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো ক্রিকেটারদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী একটা অবস্থানে যেতে পেরেছে। এখন দুর্বলতার জায়গাগুলো উন্নতি করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। এশিয়া কাপের ফাইনালের পর দুদিন বিরতিতে টি২০ বিশ্বকাপে আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে নিয়েই লড়াই করবে তারা। সেই লড়াই শুরুর আগে এশিয়া কাপের মাধ্যমে টি২০ ফরম্যাটেও ক্রিকেট বিশ্বের জন্য একটা বার্তাই দিল টিম বাংলাদেশ।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এনআই/মার্চ ০৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর