নাসিকে ভোটগ্রহণ বাহ্যিকভাবে সুষ্ঠু হয়েছে : রিজভী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ বাহ্যিকভাবে সুষ্ঠু হয়েছে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একইসঙ্গে তিনি শেষ মুহূর্তে ভোটের ফলাফলের ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’ হয় কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে নাসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে সোয়া চারটায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন রিজভী।

ফলাফল ঘোষণা পরে নির্বাচনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবেন, এমনটা উল্লেখ করে রিজভী বলেছেন, ‘বাহ্যিকভাবে আমরা যেটি দেখেছি, সারাদিনে দুই-চারটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোটের সুষ্ঠ হওয়ার পরিবেশ দেখেছি। তবে পর্দার অন্তরালে কি ঘটে, সেটা আমরা এখনো জানি না। ভোট গণনার পর ফলাফল ঘোষণার ব্যাপার আছে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘এর মধ্যে কী হবে? পর্দার অন্তরালে ফল পাল্টানোর বা ছিনিয়ে নেওয়ার যে ঘটনা, এটা তো এই সরকারের আমলে বহুবার আমরা দেখেছি। এখন জানি না কী হবে? আমাদের আশঙ্কা, শেষ মুহূর্তে কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং ঘটে কিনা?’

এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সর্তক থাকার আহবান জানিয়ে রিজভী বলেছেন, ‘তাদের প্রত্যেকের কাছে আমাদের আহবান থাকবে- ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করা পর্যন্ত কোনো ধরনের পর্দার আড়ালে কোনো কিছু না ঘটে, সেটি তারা দেখবেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেছেন, ‘আমাদের আশঙ্কা আছে, পর্দার অন্তরালে অনেক কিছু ঘটতে পারে এবং ঘটানো যায়। যেটি বিভিন্ন সময়ে এই সরকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অন্ধকারে, ভোররাতে ব্যালট বাক্স ভরানো হয়েছে।’

ফলাফল ঘোষণা করা না পর্যন্ত দলের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রের ভেতরে এবং নেতা-কর্মীদের কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নেওয়ার আহবানও জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

নির্বাচনের ফলাফলে কারচুপির বিষয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়ে রিজভী বলেছেন, ‘ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আশঙ্কাগুলো দূরীভূত করার দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় প্রশাসনে নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট যারা আছেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যারা আছেন- তাদের প্রত্যেকের কাছে আমাদের আহবান- ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করা পর্যন্ত কোনো ধরনের পর্দার আড়ালে কোনো কিছু না ঘটে, সেটি তারা দেখবেন।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে আমি আবারো অনুরোধ করবো, যাতে কোনো ধরনের সূক্ষ্ণ ও স্থূল ইঞ্জিনিয়ারিং না হয়, সেটি সবাই দেখবেন। তারা তাদের শেষ বেলায় ঘুরে দাঁড়াবেন, তারা ঘুরে দাঁড়িয়ে কোনো অনাচার যাতে সৃষ্টি না হয় এবং যে ভোটটি পড়েছে, সেই ভোটে যাতে জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটে সেটার তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ শামীম ওসমানের প্রাকাশ্যে ভোটদানের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেছেন, ‘প্রকাশ্যে স্থানীয় এমপির এই ভোটদান নিশ্চয়ই আইনসঙ্গত হয়নি, এটাতে নির্বাচনী বিধির সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘সর্বসম্মুখে ভোটদান করার আইন নেই। এটাও ক্ষমতার দাপট দেখানোরই একটি অংশ। যা গণতন্ত্র অনুমোদন করে না। এই যে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীক ভোট দেওয়া দেখানো হচ্ছে, এতেই বুঝা যায় যে সরকারের মনোভাবটা কী?’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আবুল খায়ের বাবলু, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবউদ্দিন খোকন, শামা ওবায়েদ, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, ফাহিমা মুন্নী, আসাদুল করীম শাহিন, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মুনির হোসেন প্রমূখ।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/জেডটি/ডিসেম্বর ২২, ২০১৬)