thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১৮ মে 24, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ১০ জিলকদ  1445

বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক টেস্ট বৃহস্পতিবার

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ০৮ ২১:২৭:৩০
বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক টেস্ট বৃহস্পতিবার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম বারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। ৯-১৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) হায়দ্রাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে বহুপ্রতিক্ষিত ঐতিহাসিক এই টেস্ট ম্যাচ।স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯ টা আর বাংলাদেশ সময় সকাল ১০ টায় শুরু হবে ম্যাচটি। বাংলাদেশে যা সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি ও দিপ্ত টিভি।

নিজেদের মাটিতে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটিতে ভারত যেমন এগিয়ে থাকছে অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে, তেমনি তাদের রয়েছে হাল আমলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি এবং সেরা স্পিনার রবিচন্দ্র অশ্বিন। এর বিপরিতে টেস্টে তুলনামূলক কম অভিজ্ঞ বাংলাদেশের রয়েছে বিশ্বমানের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, ও ঘরের মাঠে ইংলিশদের বিপক্ষে টেস্টে চমক দেখানো স্পিনার মেহদি হাসান মিরাজ। তাছাড়া দুই দলেই থাকছে অভিজ্ঞ ও তরুণদের মিশেল।

এদিকে, সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড সফর শেষে খুব বেশি ভালো ফলাফল নিয়ে এসেছে টিম বাংলাদেশ এটা বলা যাবে না। বরং সেখানে থেকে বড় এক ইনজুরির বহর নিয়ে দেশে ফেরে টিম বাংলাদেশ। যদিও সেখানে থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে দলের নেতৃত্বে ফিরেছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, তারপরও ঘুরে দাড়িয়ে আবারও ইনজুরির মুখে পড়েছেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। ইতিমধ্যে ইনজুরি নিয়ে দেশেও ফিরে এসেছেন তিনি। তার জায়গায় দলে ডাক পেয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এছাড়া ইনজুরির ধকল পুরোপুরি না কাটাতে পারায় দলে রাখা হয়নি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানকে। অপরদিকে ইনজুরির কারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে থাকতে পারছেন না ভারতের অভিজ্ঞ লেগস্পিনার অমিত মিশ্র। তার বদলি হিসেবে দলে ডাক পেয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব।

ঐতিহাসিক এ টেস্টকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে দুই দলের ক্রিকেটাররা। এমনকি ম্যাচ শুরুর আগেরদিন নিজেদের অবস্থানও তুলে ধরেছেন দুই দলের অধিনায়ক।

ঐতিহাসিক এই টেস্ট নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড সফরে অফফর্মে চলে যাওয়া টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ফর্মে ফেরার ব্যাপারে এই টেস্টে গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘ভারত ভালো দল। তাদের বিপক্ষে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে হবে। বিশেষ করে শীর্ষের ৭ ব্যাটসম্যানকেই ভালো খেলতে হবে। গত নিউজিল্যান্ড সিরিজে যারা ফর্মে ছিল না তাদেরও ফর্মে ফেরা জরুরি এই টেস্টে।’

এদিন সেশন বাই সেশনই ভালো খেলার কথাও জানিয়েছেন মুশফিক। তিনি বলেছেন ‘আসলে আমাদের দলগত নৈপুণ্যকে সামনে রেখেই খেলতে হবে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে প্রতিটি সেশন ধরে ভালো খেলা।’

এদিকে হায়দরাবাদের উইকেট নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। উইকেটের প্রকৃতি সম্পর্কে মুশফিক বলেছেন, ‘উইকেটে অনেক টার্ন রয়েছে। দ্বিতীয়, তৃতীয় দিন থেকে ভয়ঙ্কর টার্ন পাবে এই উইকেট।’

মুশফিকের কথার সূত্র ধরে উইকেট নিয়ে একই ধরণের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ক্রিকেটের জনপ্রিয় সাইট ক্রিকইনফো। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর দশটা ভারতীয় উইকেটের মতো, মন্থর হবে হায়দ্রাবাদের উইকেট। শুরুতেই ব্যাটিং করাটা সহজ হবে। কিন্তু ম্যাচের বয়স যত বাড়বে ততই স্পিন ধরবে। আর আগামী কয়েকদিন রৌদ্রোজ্জ্বল থাকারই আভাস দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

এদিকে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশকে বেশ সমীহ করেছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এমনকি এই টেস্টে বাংলাদেশকে সহজভাবেও নিচ্ছেন না তারা, এমনটিই জানিয়েছেন সাংবাদিকদের। এ প্রসঙ্গে কোহলি বলেছেন, ‘পরিশ্রম, সামর্থ্যের সঠিক প্রয়োগ আর পারফরম্যান্সে শৃঙ্খলা ছাড়া আপনি টেস্ট ম্যাচ জিততে পারবেন না। বাংলাদেশ দলে উঁচু মানের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততে হলে আমাদের দলগতভাবে সেরা পারফরম্যান্সটাই করতে হবে।’

‘এই ম্যাচেও আমাদের প্রস্তুতিটা একই থাকবে। মাঠেও একই পরিকল্পনা অনুসরণ করতে হবে। এখানে প্রতিপক্ষ কে, সেটি নিয়ে ভেবে লাভ নেই। এমন নয় যে বাংলাদেশ ভারতের জন্য সহজ প্রতিপক্ষ।’যোগ করেন কোহলি।

এদিকে সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ ব্যাটম্যানদের ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করে ভারতীয় অধিনায়ক বলেছেন ‘বাংলাদেশের ব্যাটিং হেলাফেলা করা যাবে না। টেস্টের এক দিনে সাড়ে ৩০০ বেশি রান করাটা দুর্দান্ত ব্যাপার। টেস্টে সারা দিনে ওভার প্রতি সাড়ে চার করে রান করাটাও বিশেষ কিছুই।’

উল্লেখ্য, ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর এটিই বাংলাদেশের প্রথম ভারত সফর। এর আগে মোট পাঁচবার অর্থাৎ, ২০০০, ২০০৪, ২০০৭, ২০১০ ও ২০১৫ সালে বাংলাদেশে টেস্ট খেলে গিয়েছিল বর্তমান টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা এই দলটি। আর টেস্টের পরিসংখ্যানে দুই দল মোট মুখোমুখি হয়েছে ৮ বার। যার মধ্যে ৬ ম্যাচে জয় পেয়েছে ভারত, আর দুটি ম্যাচ হয়েছে ড্র। অর্থাৎ এ পর্যন্ত দলটির বিপক্ষে জয়ে স্বাদ নিতে পারেনি বাংলাদেশের সাদা পোষাকের দল। সবশেষ ২০১৫ সালে ফতুল্লায় অনুষ্ঠিত একমাত্র টেস্টটিও বৃষ্টির কারনে শেষ পর্যন্ত হয়েছিল ড্র।

এখন দেখার বিষয়, এই টেস্টে জয় দিয়ে ইতিহাসের অংশ হতে পারে কিনা মুশফিক বাহিনী। নাকি প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলে অভিজ্ঞতার ঝুলি সম্মৃদ্ধ করেন তারা!

বাংলাদেশ দলে যারা আছেন :

মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, তাসকিন আহমেদ, কামরুল ইসলাম রাব্বি, শুভাশিস রায়, শফিউল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মুমিনুল হক।

ভারতীয় দলে যারা আছেন :

বিরাট কোহলি(অধিনায়ক), মুরালি বিজয়, লোকেশ রাহুল, চেতেশ্বর পূজারা, অজিঙ্কা রাহানে, করুণ নায়ার, ঋদ্ধিমান সাহা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, জয়ন্ত যাদব, উমেশ যাদব, ইশান্ত শর্মা, ভুবনেশ্বর কুমার, কুলদীপ যাদব, অভিনব মুকুন্দ ও হার্দিক পান্ডে।

(দ্য রিপোর্ট/এজে/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর