thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ১৯ মে 24, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ১১ জিলকদ  1445

বন্যাপ্রবণ এলাকায় ৪০০ ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মিত হবে

২০১৭ মার্চ ০৯ ১৬:৫৪:১১
বন্যাপ্রবণ এলাকায় ৪০০ ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মিত হবে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : উপকূলীয় ও বন্যাপ্রবণ এলাকায় ৪০০ মুজিব কিল্লা নির্মাণ ও ৬০ হাজার ঘরবাড়ি উঁচু করবে সরকার।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সচিবালয়ে ১০ মার্চ জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও সচিব মো. শাহ কামাল এ তথ্য জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘বন্যার সময় দেখেছি মানুষ বাঁধের উপর গিয়ে আশ্রয় নেয়। বন্যাকে সহনশীল করার দীর্ঘমেয়াদী উপায় ও পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ভি্জিএফ কর্মসূচির আওতায় ১৯টি বন্যা কবলিত জেলার ৬০ হাজার বসতবাড়ি উঁচু করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘দুঃস্থ-অসহায় পরিবার, প্রতিবন্ধী বা ষাটোর্ধ্ব বয়সী দরিদ্র মানুষ যাদের সামর্থ নেই তাদের ঘড়বাড়ি উঁচু করে দেওয়া হবে। এর ফলে বন্যার সময় তাদের বেড়িবাঁধ বা অন্যান্য স্থানে আশ্রয়ের জন্য ছুটতে হবে না।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটি (সিপিপি) গঠন করেছিলেন। তখন সে সময় উপকূলীয় ১০টি এবং বন্যাপ্রবণ ২টি জেলা থেকে ১৯৯টি ‘মুজিব কিল্লার’ তথ্য পাওয়া যায়। ওই সময় মানুষ মাটি উঁচু করে কিল্লা নির্মাণ করে নাম দেয় ‘মুজিব কিল্লা’।’

উপকূলীয় ও বন্যা প্রবণ এলাকায় ৪০০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘মোট ৪০টি জেলায় প্রোগ্রাম ডিজাইন করে ৪০০টির মতো মুজিব কিল্লা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আশা করি আগামী জুনের মধ্যে এটা অনুমোদন দেবে একনেক। এ কিল্লা মানুষ এবং গৃহপালিত পশুর আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে নির্মাণ করা হবে। মুজিব কিল্লার সামনে একটি মাঠও থাকবে। এ মাঠ স্থানীয়রা তাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করবে। বহুমুখী ব্যবহারের কথা ভেবেই আমরা এ কিল্লার ডিজাইন করেছি।’

শাহ কামাল বলেন, ‘এক হাজার বেদে পরিবারের নৌকায় সোলার প্যানেল দেওয়া হবে। গৃহহীন বাউলদের পরিবারকে আমাদের নিজস্ব সম্পদ দিয়ে বসতভিটা তৈরি করে দেওয়ার জন্য আমরা চিন্তা করছি।’

বজ্রপাত একটি নতুন দুর্যোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রচুর পরিমাণে তালগাছ ও নারকেল গাছ রোপন করা হলে সেগুলো বজ্রনিরোধক দন্ড হিসেবে কাজ করবে। এজন্য সরকারিভাবে সারা দেশে ১০ লাখ তালগাছের চারা রোপন করা হচ্ছে।’

১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তৎকালীন পাকিস্তান সরকারকে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছিল। কিন্তু এ টাকা ব্যয় করা হয়নি, তা এখনও করাচিতে রয়ে গেছে। এ টাকা ফেরত আনার বিষয়ে সরকার কোন চিন্তা-ভাবনা করছে কিনা- একজন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোফাজ্জল হোসেনে চৌধুরী বলেন, ‘কঠিন জায়গায় নিয়ে গেছেন। অনেক কিছু স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। শুধু এই টাকা নয়, অনেক টাকাই আমরা তাদের (পাকিস্তান) কাছে পাওনা আছি। এটা নিয়ে ইতোমধ্যে কথা বলা শুরু হয়েছে।’

ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ‘এটা অবশ্যই আমাদের দাবি, আমরা চাইব। এটা নিয়ে মাননীয় প্রধানমনন্ত্রীর সঙ্গে আমি কথা বলব। উনি কি ব্যবস্থা নেন, সেটা জেনে পরবর্তীতে জানাব।’

রাজধানীতে চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর সর্বশেষ অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘৩২১টি ভবন চিহ্নিত করেছিলাম যেগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন। অপসারণ করবে সিটি করপোরেশন আর কারিগরি পদক্ষেপ নেবে রাজউক। পূর্ত মন্ত্রণালয়কে আমরা চিঠি দিয়েছি, সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করছে।’

তবে এ ৩২১টি ভবনে আর কেউ বসবাস করে না জানিয়ে শাহ কামাল বলেন, ‘ভবনগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে চারটি অপসারণের বিষয়ে মহামান্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাকিগুলো (অপসারণের কাজ) তারা করে যাচ্ছে। আমরা আশা করি অতিদ্রুত অপসারণ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর এপ্রিলের পর থেকে ভবনগুলো সিলগালা অবস্থায় আছে। এরমধ্যে ১৭টি সরকারি ভবন রয়েছে, বাকিগুলো প্রাইভেট।’

দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস শুক্রবার

শুক্রবার জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালন করা হবে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী বলেন, দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য- দুর্যোগের প্রস্তুতি সারাক্ষণ/আনবে টেকসই উন্নয়ন।’

দিবসের মূল অনুষ্ঠান শুক্রবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। দুর্যোগ প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন উদ্যেগে এখানে দেখানো হবে।’

মূল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী। এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

মন্ত্রী জানান, এ বছর দিবসের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে দেশব্যাপী আলোচনা সভা, পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ, ক্রোড়পত্র প্রকাশ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা, বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড মহড়া ইত্যাদি থাকবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/মার্চ ০৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর