রাউধার মৃত্যুতে আসামি বান্ধবী সিরাত

রাজশাহী অফিস : রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ ছাত্রী মালদ্বীপের মডেল কন্যা রাউধা আতিফের মৃত্যুর ১২ দিন পর আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহীর মহানগর মুখ্য হাকিম আদালত-ক এ রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ মামলাটি দায়ের করেন।

এ মামলায় হত্যার অভিযোগ এনে রাউধার বান্ধবী সিরাত পারভীন আহম্মদকে সন্দেহভাজন আসামি করা হয়েছে। সিরাত পারভীন রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তার বাড়ি কাশ্মিরে।

আইনজীবী কামরুল মনির বলেন, আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য শাহ মখদুম থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। সকাল ১০টায় অভিযোগপত্রটি রাজশাহী মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে উপস্থাপন করা হয়। বিচারক সাইফুল ইসলাম বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এটিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য নগরীর শাহমখদুম থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

মামলার বাদি রাউধার বাবা মোহাম্মদ আতিফ অভিযোগপত্রে বলেছেন, রাউধার ঘাড়ে যে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে তা আত্মহত্যাজনিত হতে পারে না।

হোস্টেলের কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে তারা তার মেয়ের কক্ষের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেছিল কিন্তু তিনি কক্ষের দরজা ভাঙার কোনো আলামত পাননি। ঘটনার আগে মধ্যরাত থেকে সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। সকাল থেকে আবার চলেছে।

২০১৬ সালের অক্টোবরে বিখ্যাত ‘ভোগ’ সাময়িকীর নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সংখ্যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মডেলদের নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘বৈচিত্রের সৌন্দর্য উদযাপন’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছিলেন মালদ্বীপের ‘নীল নয়না’ এই মডেল কন্যা রাউধা। উঠতি মডেল হিসেবে রাউধার ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পূর্ব) আমীর জাফর দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আদালতের আদেশ হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাউধার মৃত্যুর কারণ খুজতে রাজশাহী আসেন মালদ্বীপের দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রিয়াজ ও পরিদর্শক আহমদ আলী। তারা রাউধার পরিবার, সহপাঠি ও কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। লাশ উদ্ধারের পরের দিন থেকে রাউধার পরিবারের সদস্যরা রাজশাহীতে অবস্থান করছেন। প্রথম থেকে রাউধাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করে আসছে তার পরিবারের সদস্যরা।

উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেলে নিজের কক্ষে রাউধা আতিফের লাশ পাওয়া যায়। এরপর ৩১ মার্চ তার পরিবারের সম্মতিতে ময়নাতদন্ত শেষে নগরীর হেতেখাঁ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রাউধা। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি মহিলা হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষে উঠেছিলেন তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/কেএনইউ/এআরই/এপ্রিল ১০, ২০১৭)