thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল 24, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৮ শাওয়াল 1445

শাহ আবদুল করিম

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ১৫ ০২:৩৯:০২
শাহ আবদুল করিম

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বাংলা গানের কিংবদন্তি গীতিকবি ও গায়ক শাহ আবদুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই থানার উজানধলে জন্মগ্রহণ করেন। ভাটি অঞ্চলের মতোই সমগ্র বাংলাদেশে তার গান জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি দেড় হাজারেরও বেশি গানের রচয়িতা।

ইব্রাহিম আলী ও নাইয়রজান বিবি দম্পতির সন্তান শাহ আবদুল করিম গ্রামের নৈশ বিদ্যালয়ে মাত্র ৮ দিন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেন। তারপর যা শিখেছেন নিজের চেষ্টায়। চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠেন তিনি। শৈশব থেকেই একতারা ছিল তার নিত্যসঙ্গী। জীবন কেটেছে সাদাসিধেভাবে। পেশাগত চাহিদা ও সামাজিক নিপীড়ন কোনো কিছুই তার সঙ্গীতপ্রেম ঠেকাতে পারেনি।

তিনি বিভিন্ন সময়ে তালিম নেন কমর উদ্দিন, রশিদ উদ্দিন ও শাহ ইব্রাহীম মোস্তান বকশের কাছে। তারা ভাটি অঞ্চলের গীতধারার একেকজন রত্ন। এছাড়া তিনি লালন শাহ, পাঞ্জু শাহ ও দুদ্দু শাহের দর্শনে অনুপ্রাণিত ছিলেন। বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের পাশাপাশি ভাটিয়ালি গানেও বিচরণ ছিল তার। ভাটি অঞ্চলের মানুষের সুখ-দুঃখ, প্রেম-ভালোবাসা ও পরমার্থিক জিজ্ঞাসার পাশাপাশি তার গানে উঠে এসেছে অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার ও সাম্প্রদায়িকতার বিরূদ্ধে প্রতিবাদ।

তার জনপ্রিয় কয়েকটি গান হলো- ‘বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে’, ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘গাড়ি চলে না’, ‘আমি কূলহারা কলঙ্কিনী’, ‘কেমনে ভুলিবো আমি বাঁচি না তারে ছাড়া’, ‘কোন মেস্তরি নাও বানাইছে’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু’, ‘বসন্ত বাতাসে সইগো’, ‘আইলায় না আইলায় নারে বন্ধু’, ‘মহাজনে বানাইয়াছে’, ‘ময়ুরপংখী নাও’, ‘সখী কুঞ্জ সাজাও গো’ ও ‘রঙ এই দুনিয়া তরে চায় না’। তার গান গেয়ে বাংলাদেশে অনেক শিল্পীই জনপ্রিয় হয়েছেন।

শাহ আবদুল করিমের ৬টি গানের বই প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো হলো- আফতাব সংগীত, গণসংগীত, কালনীর ঢেউ, ভাটির চিঠি, কালনীর কূলে এবং দোলমেলা। প্রকাশিত হয়েছে রচনাসমগ্র। ১০টি গান বাংলা একাডেমির উদ্যোগে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে অনেক স্মারকগ্রন্থ ও জীবনী প্রকাশিত হয়েছে। তার জীবন অবলম্বনে ‘মহাজনের নাও’ নাটকটি রচনা করেন শাকুর মজিদ। সুদীপ চক্রবর্তীর নির্দেশনায় নাটকটি প্রযোজনা করেছে সুবচন নাট্য সংসদ। এ ছাড়া তাকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রও নির্মিত হয়েছে।

বাউল শাহ আব্দুল করিম ২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এ ছাড়া দ্বিতীয় সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে আজীবন সম্মাননাসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন।

শাহ আবদুল করিমের সঙ্গীত জীবনের বড় প্রেরণা ছিলেন স্ত্রী আফতাবুন্নেসা। আদর করে তাকে ডাকতেন ‘সরলা। তিনি অনেক বছর আগে মৃত্যবরণ করেছেন। এই দম্পতির একমাত্র সন্তান নূর জালাল।

২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর শাহ আবদুল করিম মৃত্যুবরণ করেন।

(দ্য রিপোর্ট/ডব্লিউএস/এএল/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

এই দিনে এর সর্বশেষ খবর

এই দিনে - এর সব খবর