thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ৬ মে 24, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৭ শাওয়াল 1445

আজ যেসব জেলা হানাদার মুক্ত হয়

২০১৬ ডিসেম্বর ০৮ ১০:৩২:৩৫
আজ যেসব জেলা হানাদার মুক্ত হয়

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : আজ ৮ ডিসেম্বর বেশ কয়েকটি জেলা হানাদার মুক্ত হয়। জেলাগুলো হলো, মাদারীপুর, পটুয়াখালী ও খাগড়াছড়ি। দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন :

মাদারীপুর

আজ ৮ ডিসেম্বর মাদারীপুরের কালকিনি মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে কালকিনি ত্যাগ করে পাক হানাদার বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের সময় এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে কালকিনি উপজেলার ভুরঘাটায় ক্যাম্প স্থাপন করে পাক হানাদার বাহিনী। সেখানে মানুষ ধরে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিত তারা।

কালকিনি উপজেলার ৫ জন কমান্ডারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা কালকিনি উপজেলার সিডিখান, এনায়েতনগর, সমিতিরহাট ছাড়াও পাশের বরিশালের গৌরনদী ও মুলাদী উপজেলা ও কালকিনির সীমান্তবর্তী ৩টি স্থানে মুখোমুখি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করেন।

কালকিনি উপজেলা কমান্ডার আব্দুল মালেক বলেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোনো স্মৃতিস্তম্ভ বা নিদর্শন স্থাপন করা হয়নি। আর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্মাণাধীন কাজ দ্রুত শেষ করার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের নামের ফলক তৈরি করার দাবি এখানকার মুক্তিযোদ্ধাদের।

পটুয়াখালী

আজ ৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করে মুক্তিসেনারা। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে সারা দেশের মতো পটুয়াখালীও উত্তাল হয়ে ওঠে।

২৬ এপ্রিল সকাল ১০টায় পাক হানাদার বাহিনীর ৪টি বোমারু বিমান ৩ ঘণ্টা বোমা বর্ষণ করতে থাকে। সাথে সাথে সমানভাবে শেল নিক্ষেপ করে। শহরের ২নং বাঁধ ও পশু হাসপাতাল এলাকায় নামিয়ে দেওয়া হয় ছত্রীসেনা। হানাদাররা মাতবর বাড়ির ১৯ জন নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে একই স্থানে। ডিসি বাংলোসংলগ্ন ৭ জন আনসার সদস্য সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন।

১৮ নভেম্বর পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের গলাচিপার পানপট্টি ক্যাম্পে আঘাত হানলে পাল্টা আক্রমণের জবাব দিতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা। টানা ৮ ঘণ্টার সম্মুখযুদ্ধে প্রায় অর্ধশত পাক হানাদার মারা যায়। পরে ৩৮৫ জন পাক সেনা নিয়ে মেজর ইয়ামিন খান পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে মুক্তিসেনারা পটুয়াখালী শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়ে চূড়ান্ত হামলার প্রস্তুতি নেয়। ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাক সেনারা লঞ্চযোগে পটুয়াখালী শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়।

৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী শত্রুমুক্ত হয়। ওই দিন সকালে স্থানীয় শহীদ আলাউদ্দিন শিশু পার্কে মুক্তিযোদ্ধারা উত্তোলন করে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা।

খাগড়াছড়ি

আজ ৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্ত শহর রামগড় হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে অকুতোভয় মুক্তিসেনা ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর আক্রমণে পাক হানাদার বাহিনী বাধ্য হয়ে পিছু হটে রামগড় ত্যাগ করে। মুক্তিযোদ্ধা ও বাঙালি জনতা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে রামগড় প্রবেশ করে এবং স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করে রামগড়কে শক্রমুক্ত ঘোষণা করে এবং ওইদিন পড়ন্ত বিকেলে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য মরহুম সুলতান আহমেদ মুক্তিকামী বাঙালিদের নিয়ে রামগড় ডাকঘরের শীর্ষে বাংলার লাল-সবুজের পতাকাটি উত্তোলন করে রামগড়কে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন।

২ মে পাক হানাদার বাহিনীর রামগড়ে ব্যাপক আক্রমণ চালায়। রামগড়ে মুক্তিযুদ্ধ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর রফিকুল ইসলাম সমস্ত স্থাপনা ও যুদ্ধ সামগ্রী সীমান্তের ওপারে ভারতের সাবরুমে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম সাহসী লড়াইয়ের পরও রামগড়ের পতন হয়। পরবর্তীতে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবির থেকে মুক্তিযোদ্ধারা মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় আবারও পাক হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ শুরু করে। ৭ ডিসেম্বর রাতে এবং ৮ ডিসেম্বর ভোরে ভারতীয় দুটি জঙ্গিবিমান রামগড়ে পাক হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনার ওপর দুদফা সফল হামলা চালিয়ে রামগড়কে হানাদার মুক্ত করে।

(দ্য রিপোর্ট/এইচ/এম/এনআই/ডিসেম্বর ৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর