thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে 24, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ৮ জিলকদ  1445

পদ্মা সেতুকে ‘শেখ হাসিনা সেতু’ নামকরণের দাবি

২০১৭ মার্চ ০৪ ১৪:২৫:০৭
পদ্মা সেতুকে ‘শেখ হাসিনা সেতু’ নামকরণের দাবি

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নির্মিতব্য পদ্মা সেতুকে ‘শেখ হাসিনা সেতু’ নামকরণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ তাঁতি লীগ। শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করে সংগঠনটি। মানববন্ধনে সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বারের সভাপতি এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পদ্মা নদীর বুকে যে সপ্ন গড়ছেন সেটার নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ হিসেবে নামকরণ করে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যই আমাদের এই দাবি। এ দাবি না মানা হলে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, এশিয়ান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও সিআইপি হারুণ-উর-রশিদ। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুকে শেখ হাসিনা সেতু হিসেবে নামকরণ করা সময়ের দাবি। পদ্মা সেতুতে শেখ হাসিনার অবদান কেমন সেটা সবাই জানে। এ সময় তিনি এ বিষয়ে সবাইকে সরব হওয়ার আহ্বান জানান।

(দ্য রিপোর্ট/এএস/এআরই/

ধর্ম-১/ছবি আছে

ইসলামে মানবাধিকারের গুরুত্ব

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মানবাধিকার শব্দটি দু’টো আলাদা শব্দ দিয়ে গঠিত- মানব ও অধিকার। দু’টো শব্দের অর্থগত ব্যাপকতা রয়েছে। তবে সংক্ষেপে বলা যায়, মানবাধিকার হলো মানুষের প্রতি স্বীকৃতি। শুধু খাদ্য-বস্ত্রের মতো মৌলিক অধিকারই নয়, এতে অন্তর্ভুক্ত মানুষে-মানুষে সাম্য ও বাক স্বাধীনতার মতো আধ্যাত্মিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকারও। কিন্তু বিশ্বজুড়ে দুর্বলের উপর সবলের জুলুম হচ্ছে সমাজ, রাষ্ট্র বা ধর্মের নামে। অথচ এগুলোকে ধরা হয় মানুষের আশ্রয়।

যুগে যুগে মানবতার মুক্তি ও মানবাধিকার নিশ্চিত করার আশাবাদ শুনিয়েছেন বিভিন্ন মহামানব। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সা.) সপ্তম শতকে হাজির হয়েছিলেন মানুষের মর্যাদা সম্পর্কে নতুন ধারণা নিয়ে। তিনি প্রচার করেছেন মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি ও মানুষকে সর্বোত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করা হয়েছে। ইসলাম বর্ণ, গোত্র, ভাষা, সম্পত্তি বা অন্য কোনো মর্যাদার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে না। এটি একটি সম্বন্বিত ধারণা।

ইসলামে রাষ্ট্রের ধারণা অস্পষ্ট, কিন্তু প্রাধান্য দেয় উম্মাহ ও সমাজকে। ইসলামের প্রথম যুগে মদীনাভিত্তিক সমাজে মুসলিম নাগরিকরা সামাজিক, আধ্যাত্মিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সকল অধিকার ভোগ করতেন। ইসলামে ব্যক্তিগত অধিকারের মধ্যে রয়েছে জীবনের নিরাপত্তা, নারীর অধিকার, হত্যা না করা, গীবত না করা, ক্ষমা প্রদর্শন, সদাচরণ, রাজনৈতিক অধিকার, শ্রমিকের অধিকার, ব্যক্তিগত অধিকারসহ অনেক কিছু। সামাজিক অধিকারের মধ্যে রয়েছে বেঁচে থাকার অধিকার, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মালিকানার অধিকার, সাম্যের অধিকার, চুক্তিবদ্ধ হওয়ার অধিকার, লেখা, বলা ও প্রচার কার্যের অধিকার।

এইসব অধিকারের প্রত্যেকটি আলাদা আলাদাভাবে আলোচিত হওয়ার দাবি রাখে। তবে এইসব অধিকারের সারমর্ম লুকিয়ে আছে কুরআনে দেওয়া মানুষের সৃষ্টি সম্পর্কিত ধারণায়।

পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-‘আমি মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ ও চমৎকার অবয়বে সৃষ্টি করেছি।’ (সূরা-আত তিন : ০৩)

আরও বলা হয়েছে- ‘তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে বাছাই করা হয়েছে, মানবের কল্যাণের জন্য।’ (সূরা-আল-ইমরান : ১১০)

মানুষে মানুষে সাম্যের ধারণাটি পাওয়া যায় অন্য আয়াতে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে ‘হে মানুষ, আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক নর ও নারী হতে।’ (সূরা-আল হুজরাত : ১৩)

ইসলামের শান্তির বাণী শুধু নিজ ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং পরমত ও পরধর্মের প্রতি সহনশীলতা ও সহানুভূতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্যে গুরুত্ব দেন রাসূল (সা.)। উম্মার ধারণার মধ্যে অন্যান্য ধর্মের স্বাধীনতা ও অধিকার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। রাসূল (সা.)-এঁর সময়কালে করা চুক্তিগুলো দেখলে সেটি বুঝা যায়। হিজরি ৬২৪ সালের ‘মদীনা সনদ’ মানবাধিকারের স্বীকৃতির জন্য বিখ্যাত। এই সনদে ৪৭টি ধারা ছিল। ধারাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-

১. মদীনা সনদে স্বাক্ষরকারী ইহুদী, খ্রিষ্টান, পৌত্তলিক ও মুসলমান সম্প্রদায়সমূহ সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে এবং তারা একটি জাতি গঠন করবে।

২. পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় থাকবে। মুসলমান ও অমুসলমান সম্প্রদায়ের লোকেরা বিনা দ্বিধায় নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

৩. রক্তপাত, হত্যা, ব্যভিচার এবং অপরাপর অপরাধমূলক কার্যকলাপ একেবারেই নিষিদ্ধ করা হলো।

৪. দুর্বল ও অসহায়কে সর্বতোভাবে সাহায্য ও রক্ষা করতে হবে।

৫. ইহুদীদের মিত্ররাও সমান নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করবে।

নব্যুয়তপ্রাপ্তির আগে হযরত আব্বাস (র.)-সহ অন্যদের নিয়ে গঠিত হিলফুল ফুযুল ছিল বর্ণবাদে আক্রান্ত অন্ধকার আরবে মানুষের স্বাধীনতা ও বেঁচে থাকার অধিকারের প্রতি স্বীকৃতি।

রাসূল (স.) তার বিদায় হজ্বের ভাষণে অন্যান্য অধিকারের সাথে সাথে দাস-দাসীদের অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। সেখানে বলা হয়েছে- মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই সমান।

তিনি বলেন, কোনো আরবের উপরে অনারবের প্রাধান্য নেই। প্রাধান্য নেই কোনো অনারবের আরবের ওপর। সাদা মানুষের প্রাধান্য নেই কালো মানুষের উপর।

রাসূল (স.)-এঁর ওফাতের পর এই ধারা অব্যাহত ছিল। যেমন হযরত আবু বকর (র.) তাঁর প্রথম ভাষণে বলেন, ‘আমি সৎপথে থাকলে আপনারা আমাকে সাহায্য করবেন এবং সমর্থন যুগাবেন, আর বিপথগামী হলে উপদেশ দিয়ে পথে আনবেন।’

হযরত ওমর (র.)-এঁর খেলাফতকালেও প্রত্যেক পুরুষ ও মহিলার পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিশ্চিত ছিল। শাসন সংক্রান্ত ব্যাপারে তারা তাদের নিজস্ব অভিমত, অভিযোগ, বিকল্প প্রস্তাব ইত্যাদি পেশ করতে পারতেন।

মানুষের সম্মান কোনো বর্ণ-গ্রোত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে না। বরং আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা বা তাকওয়া নির্ধারণ করবে ব্যক্তির মর্যাদা। যেমন কুরআনে বলা হয়েছে- ‘আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদাবান হলো যারা তাকে ভয় করে।’ (সূরা- আল হুজরাত : ১৩)

সমাজে মর্যাদার সাথে বাস এবং জানমালের হেফাজতের হচ্ছে একজন মানুষের সামাজিক অধিকার। ইসলাম কাউকে কারো মর্যাদা হরণ ও অন্যায়ভাবে হত্যার অনুমোদন দেয় না। আল্লাহ বলেন : ‘অন্যায়ভাবে কেউ যদি কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানষকে হত্যা করল।’

হাদিসে বলা হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের ওপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’

এমনকি যুদ্ধের সময় বিরোধী পক্ষের নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও যুদ্ধবন্দীদের সাথে ভালো আচরণের কথা বলা হয়েছে।

সুতরাং, ইসলামে মানবাধিকারকে খণ্ডিতভাবে দেখার সুযোগ নেই। এখানে নিজ সমাজের সুবিধার জন্য অন্যায়ভাবে অপরকে ক্ষতিগ্রস্থ করার সুযোগ নেই। একে সমাজ-রাষ্ট্রের সাথে সাথে বৈশ্বিকভাবে দেখতে হবে। তাই ইসলামের মানবাধিকারের ধারণায় রয়েছে অখণ্ড ও সুদূরপ্রসারী তাৎপর্য। এর সাথে মানুষের ইহলৌকিক কল্যাণ ও পারলৌকিক মুক্তি জড়িত। ফলে মুমিনের পক্ষে মানবের অধিকারের প্রতি স্বীকৃতি অপরিহার্য।

(দ্য রিপোর্ট/এফএস/এনআই/মার্চ ০৪, ২০১৭)

মার্চ ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর