thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে 24, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ৮ জিলকদ  1445

রান আর রেকর্ডে চাপা পড়েছে বাংলাদেশ

২০১৪ জানুয়ারি ২৯ ২১:০৬:১৪
রান আর রেকর্ডে চাপা পড়েছে বাংলাদেশ

আরিফ সোহেল, দ্য রিপোর্ট : চাইলে পাঠক হিসেবে আপনি বাহবা দিতে পারেন মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অভ্যাগত স্কুলপড়ুয়া দর্শকদের। শ্রীলঙ্কার রানের পাহাড়ের নিচে চিড়ে চ্যাপটা বাংলাদেশ। অন্যদিকে রেকর্ডের সাম্রাজ্যে অনুপ্রবেশ করেছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটার মাহেলা জয়বর্ধনে। অথচ তারপরও আনন্দ-উন্মাদনায় একটুও ভাটা নেই। গ্যালারিজুড়ে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ স্লোগান, যেন ক্রিকেটারদের বেশি বেশি উদ্বেলিত করতেই হাজার পাঁচেক স্কুলপড়ুয়া দর্শক গলা ফাটিয়েছেন। এমনকি তাদের শ্রীলঙ্কার ৭৩০ রানের জগদ্দল পাথরের চাপেও নতজানু হতে দেখা যায়নি। এটা বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। টেস্ট আঙিনায় ১৩তম সর্বোচ্চ রান। এর আগে খুলনায় ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ৬৪৮ রানই ছিল সর্বোচ্চ ইনিংস। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসের ইনিংস ঘোষণা করে লিড নিয়েছে ৪৯৮ রানের। এখনও এগিয়ে ৪৬৩ রান। সঙ্গে শ্রীলঙ্কার রানের রেকর্ড মাহেলা জয়বর্ধনের অনেক রেকর্ডে সমৃদ্ধ হয়েছে।

ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন বুধবার বাংলাদেশকে নিয়ে ফাঁদ পেতেছিল শ্রীলঙ্কা। শেষ সেশনে ঠিক ৯ ওভার বাকি থাকতে ইনিংস ঘোষণা করেছেন ম্যাথুসবাহিনী। টার্গেট ছিল উইকেট। তা যথার্থ প্রমাণিত করেছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। তাকে বিগ শট খেলার ফাঁদে ফেলা হয়েছিল। প্রলুব্ধ হয়েই ব্যাট চালিয়েছেন এই হার্ডহিটার। যথারীতি ১৫ বলে ১১ রানেই অক্কা। উইকেটে থেকেছেন মাত্র ১৮ মিনিট। আর শুরু থেকেই যেভাবে ব্যাটিং করেছেন তা দেখে বিস্মিত অনেকেই। যেন পাছে ট্রেন মিস হয় তেমন ভয় নিয়ে তড়িঘড়ি ব্যাট চালিয়েছেন। তামিমের মিডউইকেট নিশানা করে চালানো বলটি ব্যাটের অন্য কানায় লেগে চলে গেছে পয়েন্ট সীমানায়। অবশ্য যে ক্যাচ হেরাথের বলে লুফে নিয়েছেন পেরেরা, তা সত্যিই দৃষ্টিনন্দন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হতে পারতেন তামিম। ভাগ্যিস লাকমলের বলটি ব্যাটের কানায় আলতোভাবে লেগে থার্ড স্লিপে ঠিক জায়গায় পড়েনি। তবে ক্যাচার সর্তক থাকলে নিশ্চিত আউটই ছিলেন তামিম।

শ্রীলঙ্কা বুধবার ৩৭৫/৫-এ তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল। ব্যাট হাতে ৪২ রানে নেমেছেন মাহেলা। দিন শেষে তার কীর্তিগাথাতেই সমৃদ্ধ শ্রীলঙ্কা। তখনও তিনি ডাবল সেঞ্চুরিয়ান এবং অপরাজিত বীর সেনানী। এরই মধ্যে মাহেলা জয়বর্ধনে টপকে গেছেন অ্যালান বোর্ডারকে। ডাবল সেঞ্চুরিতে ছাড়িয়ে গেছেন শচীন-পন্টিংকে। ঢাকা টেস্ট শুরুর আগে তিনি বোর্ডারের চেয়ে ১৪৫ রান পিছিয়ে ছিলেন। তৃতীয় দিন চা বিরতির কিছুক্ষণ আগে নাসিরকে মিডউইকেট নিয়ে ছক্কা মেরে অতিক্রম করেছেন বোর্ডারকে। এতদিন ১১১৭৮ রান করা অ্যালান বোর্ডারই ছিলেন শীর্ষ ৬-এর তালিকায়। বুধবার ক্যারিয়ারের সপ্তম ডাবল (একটি ত্রিপলসহ) সেঞ্চুরি পূর্ণ করে পেছনে ফেলেছেন ওই কিংবদন্তিকে। শ্রীলঙ্কা ৭৩০/৬-এ ইনিংস ঘোষণা দেয়ার আগে ব্যাট হাতে ২০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। ১৪২তম ম্যাচে, ২৩৮তম ইনিংসে নেমে একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন এই শ্রীলঙ্কান ব্যাটার। মাহেলা আরেকটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫টি সেঞ্চুরি গড়ে। স্পর্শ করেছেন ১০০০ রানের একটি পালকও। সেঞ্চুরিতে সতীর্থ সাঙ্গাকারার পাশেও দাঁড়িয়েছেন। সব মিলিয়ে মাহেলা এক ডাবলে রেকর্ড গড়াগড়ি খাচ্ছে ঢাকা টেস্টে। পরিতৃপ্ত মাহেলা জয়বর্ধনে ম্যাচ শেষে স্মিথ হেসে বলেছেন, এমন একটি দিন, এতো রেকর্ড ভালতো লাগবেই।’

মাহেলার পাশে থাকা অধিনায়ক ম্যাথুসকে ফিরিয়ে এক পশলা আনন্দের বার্তা বইয়ে দিয়েছেন সোহাগ গাজী। সারাদিনে ওটাই ছিল বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি। সোহাগ গাজীর বলে মার্শাল আইয়ুব তালুবন্দি করার আগে খেলেছেন বাহারি ৮৬ রান। মরা উইকেটে ব্যাটিং কিভাবে, কত প্রকার করা যায় তার শতভাগ নমুনা দেখিয়েছেন মাহেলা-ম্যাথুস। তারপর মাহেলার সঙ্গে ভিথানাগে। ৬ষ্ঠ উইকেটে মাহেলা-ম্যাথুসের ব্যাটে রেকর্ড রান ১৭৯ দেখেছে মিরপুর। পরের জুটিতেও তাই। এখানেও মাহেলা-ভিথানাগে কম যাননি। সপ্তমীর যুগলবন্দিতে তারা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে তুলেছেন ১৭৬ রান। মাহেলার সঙ্গী ভিথানাগেও পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমে ব্যাট হাতে ১০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। এই জুটি ৬.০৩ রেটে ওভারপ্রতি রান তুলেছেন। অথচ আগের জুটিতের রানের গতি ছিল ওভারপ্রতি ৩.৫৫।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ : প্রথম ইনিংস ২৩২ এবং দ্বিতীয় ইনিংস ৩৫/১; ওভার ৯ (শামসুর ১১*, মার্শাল ৯*)।

শ্রীলঙ্কা : প্রথম ইনিংস ৭৩০/৬ (জয়বর্ধনে ২০৩*, ভিথানাগে ১০৩*, সিলভা ১৩৯; সাকিব ৩/১৫৯, গাজী ২/১৩০)।

(দ্য রিপোর্ট/এএস/ওআইসি/এনআই/ জানুয়ারি ২৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

খেলা এর সর্বশেষ খবর

খেলা - এর সব খবর