thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১,  ১২ জমাদিউল আউয়াল 1446

হালুয়াঘাটের তেলিখালী যুদ্ধ দিবস আজ

২০১৩ নভেম্বর ০৩ ১২:৩২:১১

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা : ৩ নভেম্বর ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ঐতিহাসিক তেলিখালী যুদ্ধ দিবস। সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের পাদদেশে ছায়াঘেরা সবুজ শ্যামলিমায় একটি উপজেলা হালুয়াঘাট। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঐতিহাসিক এই তেলিখালী গ্রাম। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের এক ঐতিহাসিক রণাঙ্গন।

৪২ বছর আগে এই দিনে তেলিখালী রণাঙ্গন হয়ে উঠেছিল রক্তাক্ত প্রান্তর। ওই দিন পতন হয়েছিল হানাদার বাহিনীর একটি শক্তিশালী ঘাঁটি। তুমুল সম্মুখ যুদ্ধের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা জয় করেছিলেন তেলিখালী।

হিট অ্যান্ড রান অর্থাৎ মার এবং পালাও পদ্ধতির পরিবর্তে মার এবং জায়গা দখলে রাখ- এই পদ্ধতি গ্রহণ করে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সাত দিন যুদ্ধের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের ব্রিগেডিয়ার ক্লে ও ব্রিগেডিয়ার সান্ত সিং ৯২ মাউনন্টেড ডিভিশনের গোলন্দাজ ইউনিট মুক্তিবাহিনীর পক্ষে আবুল হাসেম মূলত যুদ্ধের পরিকল্পনা করেন। যুদ্ধে যাওয়ার একদিন আগে মো. সেলিম সাজ্জাদসহ ভারতীয় রাজরীফ (রাজপুত) ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন কোম্পানিতে সংযুক্ত কমান্ডারদের যুদ্ধের পরিকল্পনাসহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে অবহিত করেন। পরে যুদ্ধে যাওয়ার আগে নিজ নিজ কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের বিষয়টি অবহিত করা হয় এবং নির্ধারিত সময়ে যুদ্ধযাত্রা শুরু হয়। কর্তৃপক্ষ বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট স্থান অতিক্রম করার সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এ যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩৩ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ডি কোম্পানির ১২৫ জন সৈনিক রেঞ্জার্স ও রাজাকারসহ লোকবল ছিল ২৩৭ জন। এ কোম্পানির অধিনায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেন খালেক।

অন্যদিকে ভারতীয় ব্যাটালিয়নের ৫ কোম্পানির সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের ২০৪ জন যুক্ত হয়ে ৫টি ভাগে বিভক্ত হয়ে এই যুদ্ধে লিপ্ত হয়। যুদ্ধে কৃষ্টপুরের আলাউদ্দিন শাহজাহান ওরফে বাদশাহ, পিয়ারপুরের রঞ্জিত গুপ্তসহ ২৯ মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত বরণ করেন। ভারতীয় পক্ষের আনুমানিক ৫৬ জন সৈন্য শহীদ হন। অপরদিকে ১ জন পাকিস্তানি সেনা কেরামত আলী খান ও আত্মসমর্পণকৃত ৩ জন রাজাকার ছাড়া সবাই নিহত হয়।

এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আবুল হাসেম, মেজবাহ, ওয়াজি উল্লাহ, মো. সেলিম সাজ্জাদ, আব্দুর রব, আব্দুর রাজ্জাক, আতাউদ্দিন শাহ, আকবর আলী, শামছুল হক বাদল, সেলিম সরকার রবার্ট, ইকরাম হোসেন মানিক, নেকবর আলী খান, ফজলুল করিম খান, দেবল দত্ত, প্রদীপ গুপ্ত, শ্রীধাম দাশসহ ২০৪ মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। এই যুদ্ধের পরই ময়মনসিংহের সীমান্ত অঞ্চল স্বাধীন হয়।

(দিরিপোর্ট২৪/এফএস/এএস/নভেম্বর ৩, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

সারাদেশ এর সর্বশেষ খবর

সারাদেশ - এর সব খবর