thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ৭ জিলহজ ১৪৪৫

কৃষ্ণা রানীকে চাপা দেয়া বাসচালক মোরশেদ গ্রেফতার

২০১৯ সেপ্টেম্বর ০২ ১১:০০:২৩
কৃষ্ণা রানীকে চাপা দেয়া বাসচালক মোরশেদ গ্রেফতার

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীতে বাস চাপায় বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তা কৃষ্ণা রানী চৌধুরীর পা হারানোর ঘটনায় প্রধান আসামি বাসচালক মোরশেদকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)।

সোমবার সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

‘কৃষ্ণা রানী বিআইডব্লিউটিসির হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা। ২৭ আগস্ট রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় ফুটপাত দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাস্ট পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের চাপায় দুই পা হারান কৃষ্ণা রানী। ওই বাসের চালক ছিলেন মোরশেদ।

এ ঘটনায় কৃষ্ণার রানীর স্বামী রাধে শ্যাম চৌধুরী হাতিরঝিল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় গাড়ির মালিক, চালক ও হেলপারকে আসামি করা হয়েছে। এরপর থেকে গা ঢাকা দিয়েছিলেন মোরশেদ।

বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কৃষ্ণা রানী বুধবার বিকালে দুর্ঘটনার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, ‘বাসচাপা দেয়ার পর আমি দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। এমন সময় দেখি আমি এক পা উঠাতে পারছি, অন্য পা উঠছে না। আমি অন্য পা তুলতে পারছি না কেন তা ভাবছি। পরে তাকিয়ে দেখি আমার পা নেই। পা-টা যেন আলগা হয়ে আছে।’

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কৃষ্ণা রানী বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বের হয়ে দেখি ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাস ফুটপাতের ওপর দিয়ে আসছে। আমি গাড়িটির কাছাকাছি ছিলাম। ভাবছি গাড়িটা এখানে এলো কেন?

এটা তো রোডে থাকার কথা। ফুটপাতের ওপর কেন? হঠাৎ আমার মাথায় এলো গাড়িটা তো ব্রেক ফেল করেছে। আমি তখন সবার সামনে। ভাবলাম আমাকেও সরতে হবে; না সরলে গাড়িটি আমাকে সরাসরি চাপা দিয়ে চলে যাবে।

আমি সাইডে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। সাইডে অর্ধেক গেছি, তবে বাম পা-টা সরাতে পারিনি। আমি যদি সেখান থেকে সরার চেষ্টা না করতাম, তাহলে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে যেতাম।

কৃষ্ণা বলেন, গাড়ির ধাক্কা খেয়ে আমি পড়ে যাই। আমার মাথা ফেটে যায়, পা ফেটে যায়। আমার পরনের কাপড় ছিঁড়ে যায়। তিনি বলেন, বাসচাপা দেয়ার পর আমি দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।

এমন সময় দেখি আমি এক পা উঠাতে পারছি, অন্য পা উঠছে না। আমি অন্য পা তুলতে পারছি না কেন তা ভাবছি। পরে তাকিয়ে দেখি আমার পা নেই। পা-টা যেন আলগা হয়ে আছে।

এরপর দুই ছাত্র এগিয়ে এসে আমাকে একটা সিএনজিতে তোলেন। এ সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাদের বললাম, হলি ফ্যামিলি তো কাছেই আমাকে সেখানে নিয়ে চলেন। তখন তারা আমাকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যায়।

কৃষ্ণা বলেন, হলি ফ্যামিলিতে যাওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন। এরপর নিজেদের অ্যাম্বুলেন্সে হলি ফ্যামিলির লোকজন আমাকে পঙ্গুতে পাঠান।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, বুধবার সকালে ট্রাস্ট পরিবহনের একজন প্রতিনিধি হাসপাতালে এসেছিলেন। এ দুর্ঘটনার বিষয়ে তারা সমঝোতা করতে চান। আমি বলেছি, আমার অফিস যে সিদ্ধান্ত দেবে, আমরা তা মেনে নেব।

পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, জীবন বাঁচাতে মঙ্গলবার রাতে কৃষ্ণার থেঁতলানো পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। পায়ের কিছু অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে একবার বমি হওয়ায় নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে তাকে নেয়া হয়।

তার মাথায় সিটিস্ক্যান করা হয়। মাথায় কোনো আঘাতের চিহ্ন না পাওয়ায় তাকে পঙ্গু হাসপাতালে আনা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/সেপ্টেম্বর ০ ,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর